বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে পলাতক ঘোষণা করে রায় দিয়েছে আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগ বলেছে, হাইকোর্ট পলাতক জোবাইদার মামলা শুনে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। বুধবার আপিল বিভাগ এই রায় দিয়েছে।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুটি মামলা নিয়ে এই আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘জোবায়দা রহমানের একটা আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছেন৷ এ সংক্রান্ত একটা রায় আজকে প্রকাশ হয়েছে।
‘আপিল বিভাগ তার রায়ে জোবাইদা রহমানকে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক বলেছেন। আর পলাতক অবস্থায় তার আবেদন শোনা ঠিক হয়নি। পলাতক আসামি কোনো আদালতে হাজির না হয়ে আবেদন করতে পারবেন না।’
আত্মসমর্পণ না করে সরাসরি হাইকোর্টে আবেদন করতে তিনি পারেন না। এ ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেও উল্লেখ করেছে আদালত।
তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। অথচ দেখা গেছে, সেই সুবিধা তাকে দেয়া হয়েছে। কাজেই অ্যাপেক্স কোর্টের দায়িত্বই ছিল এটা।’
আদালতে আত্মসমর্পণ না করে কীভাবে হাইকোর্ট এ মামলা শুনলেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
১৬ পৃষ্ঠার রায়ে বলা হয়েছে, হাইকোর্ট এ মামলাটি এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে শুনেছিল।
শত বছরের নজির ভেঙে জোবাইদা রহমানের মামলাটি শুনেছে বলেও উল্লেখ করে আপিল বিভাগ বলেছে, এটা অবৈধ ও সংবিধান লংঘন।
হাইকোর্টের দেয়া আট সপ্তাহের জোবাইদা রহমানকে আত্মসমর্পণের আদেশ বাতিল করে রায় দেন প্রধান বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
২০০৮ সালে হাইকোর্ট জোবায়দা রহমানের আবেদন শুনে আদেশ দিয়েছিল।
ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এ মামলা করা হয়।
মামলায় তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।
একই বছর তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পৃথক রিট আবেদন করেন। রিটে জরুরি আইন ও এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা। হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেয়।
রুল জারির ১৫ বছর পর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ এপ্রিল রিট মামলা হাইকোর্টের কার্য তালিকায় ওঠে। এরপর হাইকোর্ট রুল শুনানির জন্য ২০ এপ্রিল দিন ঠিক করেন। ওইদিন তারেক ও জোবাইদার পক্ষে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে হাইকোর্ট শুনানির জন্য ২৯ মে দিন ঠিক করেন।