অভ্যুত্থানে গুলির নির্দেশদাতা ৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আরও ৪৪ জন সরকারি আমলা তালিকা প্রকাশ করেছে জুলাই ঐক্য। এছাড়াও আগামী ৩১ মে’র মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশসহ ১৩২ ধারার বাতিল করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। দাবি না মানলে মার্চ টু সচিবালয় কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই ঐক্য কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ৭ দফা দাবি জানিয়ে এসব কথা বলা হয়।
দাবিগুলো হলো-
# আগামী ৩১ মে’র মধ্যে তালিকায় উল্লিখিত সন্ত্রাসী দল আওয়ামী লীগের সকল দোসরদের বাধ্যতা মূলক অবসর দিতে হবে;
# তিন সরকারি কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি দেশের জনগণকে দেখাতে হবে;
# দেশের তথ্য পাচারকারী ছাত্রজনতার বুকে গুলি চালানো, নির্দেশকারী এবং সহযোগিতাকারী সকল আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবারসহ সকলের ব্যাংক হিসাব ও অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে;
# স্বৈরাচারের দোসর আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে;
# আগামী ৩৬ শে জুলাইয়ের (৫ আগস্ট) মধ্যে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সকল স্বৈরাচারের দোসরদের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে;
# আইনের ১৩২ ধারার কারণে থানায় খুনি পুলিশদের নামে মামলা নেওয়া হয় না। আগামী ৩১ মে’র মধ্যে এই ধারা বাতিল অথবা সংশোধন করতে হবে;
# আগামী ৩১ মে এর মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারা এখন কোথায় আছে এবং কত জন কার সহযোগিতায় দেশ ছেড়েছে তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।
তারা বলেন, সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে যে গ্যাজেট প্রকাশ করেছে সে অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম এবং ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ সরকার নেয়নি। গ্যাজেট অনুযায়ী ১৪ দলের শরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। জুলাই আগস্টে শুধু নয় গত সাড়ে ১৫ বছর সচিবালয়ের আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা যেভাবে শেখ হাসিনার হত্যাকে শক্তিশালী করেছিল তারা এখনও সচিবালয়সহ বিভিন্ন স্থান নিয়ন্ত্রণ করছে।
সংবাদ সম্মলনে বক্তারা বলেন, ২ হাজার প্রাণ ও ৩১ হাজার আহত ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার পেলেও আমাদের ব্যর্থতা বিপ্লবী সরকার গঠন করতে না পারা। যে সুযোগটি নিয়েছে আওয়ামী লীগের দোসররা। দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন সহযোগিতা করছে কিছু আমলা ও প্রশাসনে থাকা কর্মকর্তারা। আমরা দেখেছি একদিন আগেও ঢাকার একাধিক স্থানে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। প্রশাসন যদি সবর থাকত তাহলে তারা এই মিছিল করতে সাহস পেত না। এখনও আওয়ামী লীগের অনেক এমপি মন্ত্রী দেশে আছে। সরকারের সেই আমলারাই তাদের সেফ এক্সিট দিচ্ছে। সর্বশেষ আব্দুল হামিদ তার প্রমাণ।
এসময় বক্তব্য রাখেন, জুলাই ঐক্য’র অন্যতম সংগঠক এ বি জুবায়ের, মোসাদ্দেক আল ইবনে মোহাম্মদ, আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ। এসময় ৪৪ জন সরকারি আমলাদের তালিকা উপস্থপন করেন জুলাই শহীদ মুনতাসির রহমানের বাবা সৈয়দ গাজীউর রহমান। ৯৫ জন মাজিস্ট্রেটের তালিকা উপস্থাপন করেন একতা বাংলাদেশ আহ্বায়ক তারিক প্লাবন।
খুলনা গেজেট/এএজে