করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে আগামী বছরের এসএসসি এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে। পাঠ্যসূচি কাটছাঁট করে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তার ভিত্তিতে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করিয়ে জুন নাগাদ এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হতে পারে। আর কাটছাঁট করা পাঠ্যসূচিতে ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করিয়ে জুলাই-আগস্টে এই পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। আজ মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এ সময় তিনি শিক্ষার বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
বই উৎসবসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে আজ মঙ্গলবার অনলাইনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী এতে আরো বলেন, এইচএসসি’র ফল নিয়ে কেউ অসন্তুষ্ট হবে না। করোনার কারণে এবার এইচএসসির ফল ঘোষণার জন্য বিশেষ অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। ফলাফল প্রস্তুতের জন্য ইতোমধ্যে ৮ সদস্যের পরামর্শক কমিটি টিমে কাজ করছে। ফলাফল নিয়ে যদি কোনো শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ হন তাহলে তিনি নিজ শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করতে পারবেন। তবে আশা করছি রেজাল্ট নিয়ে কেউ অসন্তুষ্ট হবেন না।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জেএসসি বা জেডিসি’তে কোন মার্কিং দেয়া হবে না। শুধুমাত্র সার্টিফিকেট দেয়া হবে। আমাদের শ্রেণিকক্ষে সহযোগিতামূলক আচরণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রোল নম্বরের কারণে। তাই ২০২১ সাল থেকে শ্রেণিকক্ষে থাকছে না কোন রোল নম্বর। শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি নম্বর দেয়া হবে।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রাখা হয় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর পর বেশ কয়েক দফায় বাড়ানো হয় ছুটি। সর্বশেষ আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়েছে সরকার। প্রতিবছর ১ জানুয়ারির বই উৎসব সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। তবে চলমান করোনা পরিস্থিতির এবছর সারা দেশে বই উৎসব হচ্ছে না।
এর আগে গত ২৫ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। তবে এসএসসি পরীক্ষা যেহেতু বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই এ ফল থেকে ৭৫ শতাংশ এবং জেএসসির ফল থেকে ২৫ শতাংশ নম্বরের ভিত্তিতে ফল প্রকাশের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর ডিসেম্বরের মধ্যেই এইচএসসির ফল প্রকাশ করার কথা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা প্রসঙ্গে ওই সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ না কমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে না। শীতের প্রকোপ সাধারণত মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত থাকে। এর মধ্যে ভর্তি-প্রক্রিয়াও শেষ হয়ে যাবে। এরপর যদি করোনার প্রকোপ কমে যায়, তাহলে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প পরিসরে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। তবে সব শ্রেণির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে আরও কিছু সময় দেরি হতে পারে।
খুলনা গেজেট/এনএম