বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দিলেও অনুমতি না থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশে যেতে পারছেন না।
এসময় খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবিতে আগামী শনিবার (২০ নভেম্বর) সারা দেশে অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব।
অনতিবিলম্বে খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষায় তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া ব্যবস্থা করতে মির্জা ফখরুল সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ।
এদিকে, বুধবার খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ইস্যুতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে নিয়ে বাসায় থাকতে দিয়েছি, এটাই কি বেশি নয়? আপনাকে যদি কেউ হত্যার চেষ্টা করত, আপনি কি তাকে গলায় ফুলের মালা দিয়ে নিয়ে আসতেন?’
এর আগে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতাল থেকে ফেরার মাত্র ৬ দিনের মাথায় গত শনিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে তাকে পুনরায় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এর আগে, গত ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। টানা ২৬ দিন চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন তিনি।
তখন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ বছরের ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। তখন ৫৪ দিন হাসপাতালে থাকতে হয় তাকে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর প্রথমে পুরান ঢাকার বিশেষ কারাগার ও পরে কারাবন্দি অবস্থায় বিএসএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য তারা সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও তিন দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার।
খুলনা গেজেট/এনএম