বছরের সবচেয়ে শীতলতম মাস জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ তিনটি শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। এর মধ্যে একটি তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। সদ্য শেষ হওয়া ডিসেম্বর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি বৃষ্টি হলেও চলতি মাসে (জানুয়ারি) কম বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দিতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি এই পূর্বাভাস দিয়েছে। রোববার (২ জানুয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকার ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রে ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
বিশেষজ্ঞ কমিটির চলতি মাসের পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জানুয়ারি মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
এতে আরও বলা হয়, এ মাসে দেশে ২ থেকে ৩টি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে একটি তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্য প্রবাহে রূপ নিতে পারে। এ মাসে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম থাকতে পারে।
জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালকা বা মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশা পরিস্থিতি কখনো কখনো দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
লতি মাসে দেশের সব প্রধান নদ-নদীগুলোর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সদ্য শেষ হওয়া মাসের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডিসেম্বরে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০১ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ময়মনসিংহ বিভাগে স্বাভাবিক এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে।
গত ৩ ডিসেম্বর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ সৃষ্টি হয় জানিয়ে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, এটি পরবর্তী সময়ে এটি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় প্রথমে নিম্নচাপ এবং পরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও লঘুচাপে পরিণত হয় এবং পরিশেষে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। নিম্নচাপটির প্রভাবে ৫ থেকে ৬ ডিসেম্বর ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ স্থানে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হয়। এ সময় এ মাসের দৈনিক সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ১২৪ মিলিমিটার কুমিল্লায় রেকর্ড করা হয়।
উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করায় ২০ থেকে ২১ ডিসেম্বর রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। গত ২০ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিশেষজ্ঞ কমিটি আরও জানায়, ডিসেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ০ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। এ মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কক্সবাজারে রেকর্ড করা হয়।