খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

জাতীয় সংসদে বাজেট ঘোষণা আজ

গেজেট ডেস্ক

জাতীয় সংসদে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আজ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেট প্রণীত হয়েছে, করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের কৌশলকে সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে। যার সম্ভাব্য আকার দাঁড়াচ্ছে ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের ঘাটতিটাও থাকছে বেশ বড়। আর জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হচ্ছে সাত দশমিক দুই শতাংশ।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায় একাদশ সংসদের ত্রয়োদশ সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে জাতীয় সংসদের এবারের বাজেট অধিবেশন।

আজ বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) বিকেল ৩টায় ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপিত হবে। বুধবার সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের লিখিত জবাব দিতে গিয়েও প্রধানমন্ত্রী করোনা পরিস্থিতি অবতারণা করতে গিয়ে বলেন, ‘বর্তমান সরকার করোনা মহামারি থেকে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শুরু থেকেই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশব্যাপী ও অঞ্চলভিত্তিক লকডাউন কার্যকরসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষকে ত্রাণ সহযোগিতা প্রদানসহ জীবিকা ও অর্থনীতি বাঁচাতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’

করোনা মহামারি পাল্টে দিয়েছে অর্থনীতির সব হিসাব-নিকেষ। বাজেটে বৈচিত্র্য তো দূরের কথা, হিমশিম খেতে হচ্ছে মৌলিক কাঠামো দাঁড় করাতেই। তাই বাজেটে, স্বভাবতই গুরুত্ব পাচ্ছে সম্পদ আহরণ, বণ্টন এবং করোনা মোকাবেলার কৌশল। অবস্থা অনুকূলে না থাকায়, চলতি বাজেট থেকে মাত্র ছয় শতাংশের মতো বাড়িয়ে, আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ছয় লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি।

এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে সক্ষমতা বৃদ্ধি। যাতে করে (করোনা) তৃতীয় প্রবাহ যদি আসে। কোভিড না যায় আমরা যেন মোকাবিলা করতে পারি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, বিদ্যুৎ এবং অবকাঠামো। এই কয়েকটি ক্ষেত্রে আপনাকে প্রতিনিয়ত কাজ করতে হবে, বিনিয়োগ করতে হবে। বাড়াতে হবে, আপডেট করতে হবে। এই বাজেটেও আমরা তাই চালিয়ে যাব।’

এরই মধ্যে নতুন অর্থবছরের জন্য ১৪ শতাংশ আকার বাড়িয়ে দুই লাখ ৩৬ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার এডিপির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়নি, তাই আসছে বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য থাকছে সাতের ঘরে। মহামারির মধ্যে বাজেট প্রণয়নে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জও মাথায় রাখতে হচ্ছে সরকারকে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই বাজেটের প্রধান চ্যালেঞ্জটাই হচ্ছে করোনা মোকাবিলা। এরই মধ্যে করোনার কারণে আমাদের বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বড় বড় সেক্টরগুলো যদি অকেজো হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত যেতে পারবে না। কাজেই করোনাকেই এই বাজেটে ফোকাসে রাখতে হবে।’

বছরজুড়েই রাজস্ব আয়ের ভাটা কাটাতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করোনার কারণে, করছাড় দিতে হচ্ছে বহু জায়গায়। তাই, নতুন করে লক্ষ্যমাত্রা বড় করার সুযোগ পাচ্ছে না সরকার। যা একদিকে বাড়াবে বাজেট ঘাটতি, অন্যদিকে বিদেশি উৎসের ওপর নির্ভরতাও বাড়াবে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যেভাবে প্রত্যাশিত ছিল কর থেকে যে আদায় সেটা কিন্তু আমরা করতে পারিনি। এক্ষেত্রে আমাদের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের দুর্বল জায়গাগুলো সেটা, এনবিআরের সক্ষমতা বৃদ্ধি- এসব জায়গাগুলোতে বিনিয়োগের ব্যবস্থাটা আমাদের বাজেটে থাকতে হবে।’

এবারের বাজেটেও স্বাস্থ্যখাতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ ছাড়া করোনার অভিঘাতের মধ্যে, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতাও বাড়ছে আগামী অর্থবছরে।

সর্বোপরি করোনা মহামারির কারণে অর্থনীতির সূচকগুলোতে লাগা ধাক্কা সামলে, সময়োপযোগী বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের চ্যালেঞ্জ থাকছে অর্থমন্ত্রীর সামনে।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!