ভারতের হামলার জবাবে দেশবাসীর উদ্দেশে দেয়া টেলিভিশন ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন- শহীদদের প্রতিটি রক্তবিন্দুর হিসাব নেয়া হবে। তিনি ভারতের এই ‘আগ্রাসন’কে মারাত্মক ভুল হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ভারত ভেবেছিল পাকিস্তান পিছু হটবে। কিন্তু তাদের (ভারত) এই ভুলের মূল্য চুকাতে হবে।
শেহবাজ বলেন, ভারত ভুলে যায়, পাকিস্তানের বীর সন্তানেরা মাতৃভূমির সম্মান রক্ষায় নিজেদের রক্তের শেষ ফোঁটা পর্যন্ত লড়াই করেছে এবং করবে। তিনি জানান, পাকিস্তান বিমান বাহিনী এক ঘণ্টার লড়াইয়ে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করে, যা একসময় ভারতের গর্ব ছিল। এখন সেগুলো শুধু ছাই ও ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ।
এতে আরও বলা হয়, ভারতীয় বাহিনীর মঙ্গলবার রাতে বিনা উসকানিতে চালানো হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১। তারা বেসামরিক নাগরিক। ৫৭ জন আহত হয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ দেশবাসীর উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেন।
এতে তিনি বলেন, শহীদ ইরতেজা আব্বাস মাত্র সাত বছর বয়সী একটি শিশু। সে নিজের ঘরে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছিল। সেখানে স্প্রিন্টারের আঘাতে শহীদ হয়। একটি কোমল ফুল ঝরে গেছে। কিন্তু সে শহীদের মর্যাদা পেয়েছে।
শেহবাজ শরীফ আরও বলেন, ভীরু শত্রু নিরীহ মানুষদের ওপর আঘাত করছে। পাকিস্তান দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হয়।
তিনি পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব ও সাহসিকতার প্রশংসা করে বলেন, মার্শাল এম এম আলমের বজ্রধ্বনি যেন আজও প্রতিধ্বনিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব জয়েন্ট চিফসের চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আসিম মুনির, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জাহির বাবর সিদ্দিক এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ সহ সব অফিসার ও সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, পোহালগাম হামলা নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
পাকিস্তান একটি স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছিল, যা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু ভারত আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়ম ভেঙে হামলা চালিয়েছে।
কাশ্মীর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত বিরোধপূর্ণ এলাকা ছিল এবং থাকবে। ভারত যত সিদ্ধান্তই নিক, বাস্তবতা বদলাতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তান সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ, যেখানে প্রায় ৯০,০০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১৫২ বিলিয়ন ডলার। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতের আগ্রাসন আমাদের দৃষ্টি সন্ত্রাসবাদ নির্মূল থেকে সরাতে পারবে না।
সবশেষে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণ একতাবদ্ধ। জাতি তার বীর সেনাবাহিনীর পাশে আছে এবং সম্মিলিতভাবে শত্রুকে পরাজিত করবে।
খুলনা গেজেট/এইচ/এনএম