জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এক বছরে বাংলাদেশে ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম স্থানে রয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট ২০২৪-এ এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) রাজধানীর হোটেল শেরাটনে আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ এই বৈশ্বিক রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকার পর এশিয়ার বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির মূল কারণ ছিল দুর্যোগ। ব্যাপক ও ভয়াবহ বন্যার অভিজ্ঞতা অর্জনকারী পাকিস্তানে ২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতি’ (৮০ লাখেরও বেশি) রেকর্ড করা হয়েছে। এই অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতি ফিলিপাইনে রেকর্ড করা হয়েছিল (প্রায় ৫৫ লাখ বা ৫.৫ মিলিয়ন)। তারপরেই অবস্থান করছে চীন (৩৬ লাখ বা ৩.৬ মিলিয়নেরও বেশি)।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে বাংলাদেশে রেকর্ড বন্যা হয়। সেই বছর শুধু দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে ১৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এছাড়া ২০২২ সালেও ভারত ও বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে। সেই বছর এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি হয়েছে মিয়ানমারে (১০ লাখের বেশি)। এর বড় কারণ দেশটির সামরিক ও অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘাত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিধ্বংসী বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়, যার মধ্যে কয়েকটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটেছে। দক্ষিণ এশিয়া জলবায়ু অভিঘাতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাপপ্রবাহ এবং বন্যার মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনার মুখোমুখি হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দীর্ঘ বর্ষা ঋতু, উষ্ণ আবহাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান খরা সবই এই অঞ্চলে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা বাস্তুচ্যুতদের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছে। তারপরও সহানুভূতি দেখিয়েছে বাংলাদেশ। অভ্যন্তরীণ প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাস্তুচ্যুত বিষয়ক নতুন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে বাংলাদেশ কাজ করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
খুলনা গেজেট/কেডি