আশানুরূপ চাকরি প্রত্যাশী মেলেনি যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) জব ফেয়ারে। সরকারের তত্বাবধানে সৌদি আরবে পাঠানো হবে এসব চাকরি প্রত্যাশীদের। যশোর থেকে সহস্রাধিক প্রার্থীর চাহিদা থাকলেও মাত্র দুই শতাধিক প্রার্থী মিলেছে জব ফেয়ারে। সোমবার (০৪ অক্টোবর) শহরের শংকরপুরের টিটিসিতে আয়োজিত জব ফেয়ারে এ তথ্যই মিলেছে।
এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ৩৫০ জন চাকরি প্রত্যাশী সৌদি আরবে চাকরির জন্য সরাসরি সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হন। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষ ২১০ জনকে নির্বাচিত করেন। চাকরি প্রত্যাশীরা এক লাখ ৬৫ হাজার টাকায় সৌদি আরবে সরকারিভাবে চাকরির জন্য যেতে পারবেন।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর উদ্যোগে এসব কর্মী সৌদি আরবে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা প্রতিমাসে আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতন পাবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে যোগ্যতানুসারে কর্মীদের বেতন কম-বেশি হতে পারে। স্বচ্ছ উপায়ে সরকারিভাবে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য সরকারের এ উদ্যোগে অনেক বেকারই খুশি। তবে যারা এখনো যশোর টিটিসিতে আসতে পারেননি, তারা এখনো যোগাযোগ করলে যাওয়ার জন্য বিবেচিত হতে পারেন।
নির্বাচিত বাঘারপাড়া উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের রজিবুল ইসলাম বলেন, তার একটি কাপড়ের দোকান আছে, কিন্তু বেচাকেনা তেমন ভালো না। করোনার কারণে সংসারও ভালো চলছে না। যার জন্য তিনি বিদেশ যেতে আগ্রহী। একই কথা বলেন, সদর উপজেলার রূপদিয়া চাউলিয়া গ্রামের আল আমিন। তিনি বলেন, এত অল্প টাকায় সৌদি আরবে যাওয়া সত্যিই বিস্ময়ের ব্যাপার। একইসাথে বিদেশে চাকরির যথেষ্ট নিশ্চয়তাও রয়েছে এখানে। যার কারণে তিনি যেতে আগ্রহী হয়েছেন।
অবশ্য সদর উপজেলার সাতমাইল গ্রামের আজিম হোসেন বলেন, তিনি দু’বছর মালয়েশিয়ায় ছিলেন। এতো কম বেতনে সৌদিআরবে গেলে তার পোষাবে না, তারপরও তিনি যাবেন। যদি ডিউটির বাইরে অন্য কোন ব্যবস্থা থাকে।
এদিকে, জব ফেয়ার উপলক্ষে বিকেলে টিটিসিতে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) তত্বাবধানে ও ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এন্ড সার্ভিসেস কোম্পানির আয়োজনে সভায় নির্বাচিত দুইশ’ দশজনকে নানা পরামর্শ দেয়া হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাসচিব অতিরিক্ত সচিব শহীদুল আলম।
তিনি বলেন, দেশের ঝরেপড়া বেকারদের জন্যই এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে অল্পটাকায় সৌদিআরবে যেতে পারছে সাধারণ মানুষ। এ কাজে তারা সমাজের সুবিধা বঞ্চিতদেরই সুযোগ দিচ্ছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। আলোচনা করেন যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া, ইলেকট্রনিক্স বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক মোজাফ্ফর আলী, শিক্ষিকা প্রকৌশলী সাদেকা সুলতানা, রহিমা খানম। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, যশোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ম্যাক্স ম্যানেজমেন্ট এন্ড সার্ভিসেস কোম্পানির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এমএম