যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পতনে আনন্দ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। জনসনকে ‘মূর্খ ভাঁড়’ আখ্যা দিয়ে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনকে লড়তে অস্ত্র দেওয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত সমুচিত পুরস্কারই পেয়েছেন তিনি। তার অসম্মানজনক বিদায় ঘটেছে।
দলের ভেতর তীব্র অনাস্থার জেরে বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ দলের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বরিস জনসন। এখন নতুন দলীয় প্রধান নির্বাচিত হলে সেই ব্যক্তিই হবেন যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। এর আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাবেন বলে জানিয়েছেন জনসন। খবর রয়টার্সের।
১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে জনসন তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (জনসন) আমাদের পছন্দ করতেন না, এমনকী আমরাও তাকে পছন্দ করতাম না।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করলে কিয়েভের পাশে শক্তভাবে দাঁড়ান জনসন। তিনি অস্ত্র এবং অর্থ দিয়ে ইউক্রেনকে সহায়তার পাশাপাশি যুদ্ধে মনোবল যোগাতে দুবার কিয়েভ সফর করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কির সঙ্গে দেখা করেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে জনসন রাশিয়ার উপর যতটা কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন, মস্কোর ওপর এতটা কঠোরতা আধুনিক যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে দেখা যায়নি।
জনসন নিজের পদত্যাগ ঘোষণার ভাষণেও ইউক্রেনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেছেন, ‘স্বাধীনতার লড়াইয়ে যতদিন প্রয়োজন ততদিনই যুক্তরাজ্য আপনাদের সমর্থন দিয়ে যাবে।’
নানা কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই জনসনের আসন টলমল ছিল। তারপরও আশায় ছিলেন, ভেবেছিলেন শেষ পর্যন্ত সব সামলে উঠতে পারবেন। তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে না। সম্প্রতি নিজের সহকর্মীদের সে কথা তিনি বলেছিলেনও।
জনসন বলেছিলেন, তিনি মার্গারেট থ্যাচারের চেয়ে বেশি সময় যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে চান। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মার্গারেট থ্যাচার। যিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের চিরশত্রু বলে পরিচিত ছিলেন।
রাশিয়ার ধনকুবের ওলেগ ডেরিপাস্কা টেলিগ্রামে জনসনের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, একজন ‘মূর্খ ভাঁড়ের’ জন্য এ এক ‘অসম্মানজনক যবনিকাপাত’। যার বিবেক ‘ইউক্রেন যুদ্ধে বিনা কারণে লাখ লাখ মানুষের জীবন ধ্বংস হয়ে যাওয়ার জন্য’ একদিন জ্বলবে।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার ভিয়াচেস্লাভ ভলোদিন বলেন, ‘ভাঁড় চলে যাচ্ছে। ইউক্রেনীয়দের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাওয়ার প্রধান বুদ্ধিদাতাদের অন্যতম একজন হচ্ছেন তিনি (জনসন)। এ ধরনের নীতি কোথায় নিয়ে যায় তা নিয়ে ইউরোপের নেতাদের ভাবা উচিত।’