জনবল সঙ্কটেও সাড়ে ৪৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে সাতক্ষীরার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এ রাজস্ব আদায় হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৮৬ হাজার ২৮ টি আবেদন জমা পড়েছে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। জমাকৃত আবেদনের মধ্যে থেকে ৮৪ হাজার ৫৩৫টি পাসপোর্ট ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্য থেকে ৭৯ হাজার ৯৬০ টি পাসপোর্ট গ্রাহকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে, সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পদ রয়েছে ২৩ টি। যার মধ্যে শুন্য রয়েছে ১২ টি পদ। মাত্র ১১জন জনবল দিয়ে ৫টি বুথের মাধ্যমে গ্রাহককে সেবা দিয়ে যাচ্ছে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জনবলের চরম সঙ্কট নিয়েও ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৪৮ কোটি ৬০ লাখ ৭৬ হাজার ২৫০ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস।
পাসপোর্ট অফিস ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন প্রায় তিন শতাধিক গ্রাহক পাসপোর্ট করতে আসেন। সকাল থেকেই এসব গ্রাহকদের লম্বা লাইন শুরু হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে লাইনও লম্বা হতে থাকে। প্রচন্ড ভীড়ে একটা সময়ে অফিসের বারান্দা থেকে রাস্তায় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় গ্রাহকদের। তবে ভোগান্তি কমাতে দূর-দূরন্ত থেকে পাসপোর্ট করতে আসা গ্রাহকদের সেবা দিতে খোদ সহকারি পরিচালক মো: শাহজাহান কবির নিজে খোঁজ খবর নেন। এসময় বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুদের তিনি অগ্রাধিকার দেয়ার নির্দেশনা দেন দায়িত্বে থাকা সকলকে।
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক মোঃ শাহজাহান কবির বলেন, পাসপোর্ট গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানকল্পে প্রতি সোমবার সকাল ১০টা থেকে ২টা পর্যন্ত গণশুনানী করা হয়। গণশুনানীর মাধ্যমে গ্রাহকরা তাদের সমস্যার কথা জানতে পারে। শুনানীর সময়ই ছোট ছোট সমস্যাগুলো সাথে সাথেই সমাধান করে দেওয়া হয়। আর যেগুলো স্থানীয়ভাবে সমাধান করা সম্ভব হয় না সেগুলো উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এই অফসে দালালের অপতৎপরতার সুযোগ নেই। সব কিছু গ্রাহক নিজে নিজে করতে পারছেন। ফলে এই অফিসে দিনদিন গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়ছে। এছাড়া কেউ যদি কারও খপ্পড়ে পড়ে তবে সরাসরি তিনি আমাকে জানাতে পারবেন। নিচে আমি বিভিন্ন ব্যানারে লিখে দিয়েছি। আমাকে জানালে আমি সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমি পাসপোর্ট অফিসের গেটে একটি জবাবদিহীতা বক্স স্থাপন করেছি। ফলে গ্রাহক কেমন সেবা পেলো সেটি লিখে জানাতে পারবেন। এই অফিসের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী যদি ভাল ব্যবহার করে তাকে পুরস্কৃত করা, আর খারাপ ব্যবহার করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার জন্যই ওই জবাবদিহীতা বক্স স্থাপন করা হয়েছে।
সহকারী পরিচালক শাহজাহান কবির আরও বলেন, সাতক্ষীরায় বর্তমানে ই পাসপোর্ট চালু রয়েছে। ই-পাসপোর্ট আবেদনকারী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে, ফরমপূরণ করে আবেদন ফরমের সাথে পুরাতন পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড সংযুক্ত করে সরাসরি জমা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে বীরমুক্তিযোদ্ধা, অসুস্থ্য ও প্রতিবদ্ধীদের জন্য অফিসের নিচে তলায় প্রবেশ মুখে কলিং বেল স্থাপন করা হয়েছে। বীরমুক্তিযোদ্ধা, অসুস্থ্য ও প্রতিবদ্ধী ব্যক্তি সেবা নিতে এসে কলিং বেল চাপলে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে সেবা প্রদান করা হয়। জনবল সঙ্কট সমাধান হলে সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস আরও রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।