খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরের মৃত্যু
  আগুন নিয়ন্ত্রণে, খুলনায় পাট গোডাউনসহ ১০ দোকানের কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই

ছেলের ইচ্ছা মৃত্যু চেয়ে আদালতে বাবা-মা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিছানা থেকে উঠতে পারেনি ছেলে হরিশ। তাঁর শরীরের ১০০ শতাংশই পক্ষাঘাতগ্রস্ত। জানা গেছে, হরিশ ভারতের মোহালির চণ্ডীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। ২০১৩ সালে কলেজের চার তলা থেকে পড়ে যান তিনি। প্রাণরক্ষা হলেও শরীরের প্রায় সমস্ত অঙ্গই অকেজো হয়ে যায়। মাথার আঘাত ছিল অত্যন্ত গুরুতর। তারপর থেকেই আক্রান্ত স্নায়ুর অসুখে। দুর্ঘটনা নিয়ে ‘রহস্য’ রয়েছে বলেই পরিবারের দাবি। থানায় মামলাও করেন হরিশের বাবা রানা। ছেলের চিকিৎসার জন্য একের পর এক বড় হাসপাতালে ঘুরেছেন।

এদিকে বৃদ্ধ বাবা এখন মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা পেনশন পান। সংসার চালাতে স্ত্রীর সাহায্যে স‌্যান্ডউইচ তৈরি করে পাড়ায় বিক্রি করেন। ছোট ছেলে নামমাত্র বেতনে চাকরি করে। দিনের পর দিন ছেলের অসহনীয় যন্ত্রণা বাড়তে দেখা, নিজেদের আর্থিক অনটন আর মানসিক চাপে জেরবার হয়ে শেষ পর্যন্ত দিল্লি হাই কোর্টে ছেলের ইচ্ছা মৃত্যুর আর্জি জানিয়েছিলেন ৬২ বছরের রানা এবং তাঁর স্ত্রী নির্মলা দেবী। তাঁদের আবেদন, মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে ছেলেকে প্যাসিভ ইউথানাসিয়া দেওয়া হোক। যাতে তাঁদের সন্তানের মৃত্যু হয়।

নিজেদের সমস্ত প্রতিকূলতার বৃত্তান্ত জানিয়ে চেয়েছিলেন, মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে ছেলেকে নিষ্কৃতি-মৃত্যু দেওয়া হোক। দিল্লি হাইকোর্টে রানা জানিয়েছেন, ‘‘ছেলের ২৪ ঘণ্টা দেখাশোনার জন্য এক জন নার্স রাখতে হয়। মাসে তাঁর পারিশ্রমিক ২৭ হাজার টাকা। আর আমাদের সবার মাসিক উপার্জন ২৮ হাজার টাকা। ছেলের চিকিৎসার জন্য এক জন ফিজিওথেরাপিস্ট রয়েছেন। তাঁকেও ১৪-১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। বছরের পর বছর কষ্ট বেড়ে চলেছে, ব্যয়বৃদ্ধি হচ্ছে। কিন্তু, ছেলের ভাল হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখতে পারছি না। চিকিৎসকেরাও কোনও আশার কথা শোনাতে পারেননি। হরিশের চিকিৎসা, ওষুধপত্রের জন্য যে ব্যয়ভার, তা বহন করতে পারছি না।’’ হরিশের চিকিৎসার জন্য ১৯৮৮ সালে তৈরি তাঁদের তিন তলা বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন ২০২১ সালে। ছেলের চিকিৎসার পিছনে সব টাকা জলের মতো বেরিয়ে গিয়েছে পরিবারের। এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। কিন্তু আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।

গত ৮ জুলাই দিল্লি হাই কোর্ট রানা এবং নির্মলা দেবীর আবেদন নাকচ করে দেয়। সঙ্গে জানিয়ে দেয়, এদেশের আইন ইচ্ছা মৃত্যুর (প‌্যাসিভ ইউথানাসিয়া তথা নিষ্কৃতি-মৃত্যু ) অনুমতি দেয় না।

সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!