খুলনায় ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির আওয়ামীপন্থী ৮ সদস্যকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। রোববার খুলনা মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার তাদের জামির না-মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ মামলার অপর ১৫ জন আসামির জামিন মঞ্জুর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ও খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবা।
কারাগারে প্রেরণ করা আসামিরা হলেন, এডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস, এডভোকেট আল আমিন উকিল, এডভোকেট সোহেল পারভেজ, এডভোকেট সুমন্ত কুমার বিশ্বাস, অ্যাডভোকেট তমাল কান্তি ঘোষ, অ্যাডভোকেট শেখ শামীম আহমেদ পলাশ, অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান টুটুল ও অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান।
এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মোঃ এমাম হোসেন বাদী হয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সাইফুল ইসলামসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে খুলনা সদর মামলা দায়ের করেন। উল্লিখিত আসামীদের মধ্যে ২৩ জন গত ৩ ডিসেম্বর উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন নেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশেই তারা রোববার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণপূর্বক জামিনের আবেদন করেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে গত ৪ আগস্ট খুলনায় বিএনপি আয়োজিত মিছিলে অংশগ্রহণের জন্য নগরীর কেডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির মেইন গেট থেকে বাদী মো. এমাম হোসেনসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী মিছিল নিয়ে বের হন। তারা জেলা স্টেডিয়ামের কাছে পৌঁছালে সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সাইফুল ইসলামসহ আইনজীবী নামধারী ও আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন দমনরত অবস্থায় তাদের মুখোমুখি হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা তাদের উপর ককটেল নিক্ষেপ করে এবং হকিস্টিক দিয়ে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সভাপতি এডভোকেট সাইফুল ইসলাম ও আনিসুর রহমান পপলু তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে। তাদের ভয়ে অন্যান্য আইনজীবীরা পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করে।
প্রসঙ্গত, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তারিক মাহমুদ তারা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারী, এডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু ও এডভোকেট জেসমিন পারভীন জলি এ মামলায় পলাতক রয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এইচ/এনএম