নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্দেশক চয়নিকা চৌধুরীকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে চলে যেতে দেয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (দক্ষিণ) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ।
এর আগে যুগ্ম কমিশনার হারুন জানান, চয়নিকাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও তাকে সেখানে আটক রাখা হচ্ছে না। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হবে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
যুগ্ম কমিশনার ওই সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মনে করেছি, চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গে আমাদের কথা বলা দরকার; জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। তদন্তের স্বার্থে এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে এনেছি। অলরেডি জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তার বিরুদ্ধে যে কমপ্লেইনগুলো পেয়েছি সেগুলো আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’
‘জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমরা তাকে তার পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেবো। তাকে যখন আমরা ডাকব সে আবার আমাদের কাছে আসবে।’
শুক্রবার বিকেলে চয়নিকা রাজধানীর বাংলামোটরের সোনারগাঁও রোডে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে গিয়েছিলেন এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। ওই সময় ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। তিনি অনুষ্ঠান শেষে বের হলে তার গাড়ি ঘিরে ফেলেন গোয়েন্দারা। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বুধবার পরীমনি আটক হওয়ার পর তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আরও দুইজনসহ মোট তিনজনকে আটক করা হয়। মাদকের মামলায় পরদিন গ্রেপ্তারের পর তাদেরকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
শুক্রবার যুগ্ম কমিশনার হারুন জানান, পরীর পৃষ্ঠপোষক এক নারীকে তারা নজরদারিতে রেখেছেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সেই নারী যে চয়নিকা, সেই বিষয়ে সেই সময়ই ধারণা করা হচ্ছিল। তবে হারুন তার নাম প্রকাশ করেননি।
এর কিছুক্ষণ পরেই চয়নিকাকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান জোন আটক করে বলে নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা বিভাগের একজন সহকারী কমিশনার। সে সময় চয়নিকার গাড়িতে তার ছেলে অনন্য প্রতীকও ছিল। তিনি পরে বাসায় ফিরে যান।
চয়নিকার স্বামী অরুণ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। আমি শুধু সিদ্ধান্ত জানতে চাই। তাকে কেন নিয়ে যাওয়া হলো, সেখানে এখন কী হচ্ছে।’
দেশের নাট্য জগতে চয়নিকার আনাগোনা ২০ বছরের। তবে সম্প্রতি তিনি চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েছেন। তার ‘বিশ্বসুন্দরী’ সিনেমা বানাতে গিয়ে পরীমনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন তারা। চয়নিকার পরিচালনায় পরীমনির কাজ করার কথা ছিল ‘অন্তরালে’ নামে ওয়েব সিরিজে। গত জুনে পরীমনি ঢাকা বোট ক্লাবে তাকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ আনার পর চয়নিকার যে ভূমিকা, তাতে তিনি যে পরীমনির সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন, তা স্পষ্ট হয়।