যশোরের চৌগাছায় চলতি বছর পাটের বাম্পার ফলন হলেও খরচ জোগাতে হিমসিম খাচ্ছেন পাট চাষিরা। তবে চাষিদের দাবি অন্য সব বছরের তুলনায় এবার খরচ হয়েছে তুলনামূলক অনেক বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে পাট চাষ হয়েছে ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ২৫০ হেক্টর বেশি।
তবে এবছর পাট কেটে,বেঁধে, জমি থেকে বয়ে এনে জাগ দিতে বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে ৮ হাজার টাকারও বেশি। যা অন্য সব বছরের তুলনায় অনেক বেশি বলে মনে করছেন এ উপজেলার পাট চাষিরা।
পাট কেটে,বেঁধে, জাগ দিতে এতো খরচের কারণ জানতে চাইলে একাধিক পাট চাষিরা বলেন, এবার পাট কাটার সময় শ্রমিক সংকট। এছাড়া এবার পাট জমিতে এলেমেলো ভাবে পড়ে থাকায় তুলনামূলক ভাবে বেশি শ্রমিক লাগছে। এমন অনেক জমি আছে যেখানে বিঘা প্রতি ২৫-৩০ জন লাগছে এই পাট কাটতে। এছাড়া জমি থেকে পাট জাগ দিতে পুকুর, নদী বা বিলে আনতেও শ্রমিক লাগছে দ্বিগুনেরও বেশি।
এর পরেও এই বছর প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হওয়ায় পুকুর,খাল,বিল ও নদীতে কানায় কানায় পানিতে ভরে গেছে,যার ফলে পাট চাষিদের জন্য পাট জাগ দেওয়া অনেকটা সহজ হবে বলে মনে করছেন পাট চাষিরা।
সরেজমিন রবিবার সকালে উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের ফাঁসতলা বাজারে যেয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশেই খালি ধানি জমিতে ব্যাপক পানি জমে যাওয়ায় পাট জাগ দিচ্ছেন শ্রমিকরা। এ সময় কথা হয় পাট কাটা শ্রমিক চাঁদপাড়া গ্রামের ইউনুচ, ওয়াজেদ, আজিজুর ও হাসানের সাথে। এ সময় তারা বলেন, এবার পাট কাটা শ্রমিকের ব্যাপক সংকট রয়েছে। তাছাড়া এবার আমাদের এখানে অন্য সব বছরের তুলনায় পাট চাষ অনেক বেশি হয়েছে। ফলে পাট কাটা, বাঁধা ও জাগ দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
বড়খানপুর গ্রামের পাট চাষি মির্জা বলেন,এ বছর পাট বাতাসে পড়ে যাওয়ায় আমার দেড় বিঘা জমির পাট কাটতে সাড়ে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া পাট বেঁধে জমি থেকে পুকুরে জাগ দিতে আরো তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ সময় তিনি আরো বলেন, এই পাট এবার পুকুর থেকে ধুয়ে বাড়িতে আনতে কয় টাকা লাগবে তা আল্লাহ জানে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস বলেন, এ বছর ভালো আবহাওয়া থাকায় পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাজারে পাটের দাম বেশি পাওয়ায় এবার কৃষকরা বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই