যশোরের চৌগাছায় করোনা আর লকডাউনের কারণে নিন্ম আয়ের মানুষের নিদারুণ কষ্টে যে দিন কাটছে তা খোলা বাজারের চাল আটা বিক্রির দোকানে গেলে অনুমান করা সম্ভব বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। সপ্তাহে ছয় দিন চাল আটা বিক্রি হলেও মানুষের ভিড় কোনভাবেই কমছে না। অনেকেই কাঙ্খিত চাল আটা না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরছেন বাড়িতে।
মহামারী করোনার সংক্রমণরোধে দেশব্যাপী চলছে কঠোর লকডাউন। দীর্ঘ লকডাউনের এই সময়ে নিন্মআয়ের মানুষের কথা বিবেচনা করে গত মাসের ২৫ তারিখ হতে খাদ্য অধিদপ্তর পরিচালিত (ওমমএস) খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রি শুরু হয়। শুরুতে ৫ জন ডিলারের মাধ্যমে এই কার্যক্রম চালু হলেও এক ডিলারের অনিয়মের কারলে তার কার্যক্রম বন্ধ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রতি কেজি চাল ৩০ আর ১৮ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি হচ্ছে। এক ব্যক্তি ৫ কেজি চাল ও ৫ কেজি আটা কিনতে পারছেন। সপ্তাহে ৬ দিন সকাল ৯ টা হতে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলার কথা কিন্তু দুপুরের আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে বেচাকেনা।
পৌরসভার চার জায়গায় ৪ জন ডিলারের মাধ্যমে চলছে চাল আটা বিক্রি। সকাল ৯ টায় বিক্রি শুরুর কথা থাকলেও ভোর থেকে দোকানের সামনে মানুষের লাইন। দোকানের সামনে যে পরিমাণ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ প্রতিদিন উপস্থিত হচ্ছে তাতে রীতিমত ডিলারদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে হাইস্কুল রোডে ডিলার মাহাতাব উদ্দিনের দোকানের সামনে যেয়ে দেখা যায় উপচে পড়া মানুষ। তখনও অনেকেই পাইনি কাঙ্খিত চাল বা আটা। অথচ চাল আটা প্রায় বিক্রি সম্পন্ন করেছেন ডিলার মহাতাব উদ্দিন।
এই ডিলারের দোকানের সামনে চাল কিনতে আসা চৌগাছার আদিবাসি পাড়ার বাসিন্দা দীপ কুমার সরদার, দিপ্তি সরদার, বাকপাড়া মহল্লার হারুন অর রশিদ, আল আমিনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, ভোর ৬ টার সময় এসে লাইনে দাড়িয়েছি কিন্তু এখনও চাল পাইনি।
রোদ গরমে একাকার আর স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গকারী এই সব হতদরিদ্র মানুষেরা বলেন, বাজারে ১ কেজি চাল ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা আর এখানে ৩০ টাকা তাই কাজ কামায় করে চাল কিনতে এসেছি।
দুপুর সাড়ে ১২ টায় চৌগাছা যশোর সড়কে খাদ্য গুদামের সামনে ডিলার মেহেদী হাসান, নিরিবিলি পাড়ার ডিলার সাহাজ্জেল হোসেনের দোকানের সামনে যেয়ে দেখা যায় ক্রেতা শুন্য কারণ তাদের চাল আটা বেশ আগেই বিক্রি হয়ে গেছে।
ডিলাররা বলেন, প্রতি দিনই মানুষের চাপ বাড়ছে, পৌর এলাকা ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ আসছে। তাই অনেকেই চাল আটা পাচ্ছে না। চাল ও আটার পরিমাণ বৃদ্ধি করলে মনে হয় ভাল হত।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান লিটন বলেন, সরকারের বেধে দেয়া নিয়মে প্রত্যেক উপজেলাতে যেভাবে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আমরাও চৌগাছাতে সেভাবে ডিলারদের মাঝে বরাদ্দ দিয়েছি। বৃদ্ধির নির্দেশনা পেলে পরবর্তীতে সে ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম