খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ৭ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
  ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত

চৌগাছার পাড়া মহল্লায় কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম

মহিদুল ইসলাম, চৌগাছা 

যশোরের চৌগাছার পাড়া মহল্লায় এখন কুমড়ার বড়ি তৈরী করতে ব্যস্ত সময় পার করছে গৃহিণীরা। প্রতিবছর শীত এলেই পাড়া মহল্লায় যেন বড়ি তৈরীর প্রতিযোগীতা শুরু হয়। অন্য সব বছরের মত এবছরও তার কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি।

রাতের আধাঁরে ঢেঁকির ঢুকঢুক শব্দ জানান দেয় কোন না কোন বাড়িতে চলছে বড়ি তৈরির কাজ। আর সকাল হলেই মহল্লার নারীরা দলবেধে জাল কিংবা কাপড়ের ওপরে বড়ি বসাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

অত্যান্ত সুস্বাদু খাদ্য উপকরণ হলো কুমড়ার বড়ি। ঠিক কবে থেকে বাঙালির রান্নাঘরে বড়ির আগমন তা জানা যায়নি। তবে প্রাচীন কাল থেকে বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে বড়ির ব্যবহার হচ্ছে।

গ্রাম বাংলায় প্রবাদ আছে ‘শাক থেকে চিংড়ি মাছ বড়ির গুনে বদলে যায় রান্নার স্বাদ’। বড়ি গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে অত্যান্ত প্রিয় একটি তরকারি। এটি যেকোন তরকারির সাথে রান্না করা যায় আবার শুধু বড়ি মাছ দিয়েও রান্না করা হয়। ঢেঁকিতে কোটা বড়ি এক বছর ধরে ঘরে রেখে খাওয়া যায়। আধুনিক সভ্যতার যুগে গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্য অনেকটাই যেন কোনঠাসা হয়ে পড়েছে ।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বড়খানপুর গ্রামে যেয়ে দেখা যায়, গ্রামটির অধিকাংশ বাড়িতেই চলছে বড়ি বসানোর কাজ। গৃহিনীরা সংসারের প্রতি দিনের সকালের কাজ বেশ আগে ভাগেই শেষ করে বসে গেছেন বড়ি দিতে। পাকা বাড়ির ছাদে কিংবা উঠানের মাঝখানে দলবেধে বসে সকলেই বড়ি দিচ্ছেন। কেউ বড়ি বসানোর পাত্র প্রস্তুত কেউ বা বড়বড় গামলায় কুমড়া আর কলাই দিয়ে ঢেকিতে কুটে আনা মালামাল মিশিয়ে নিতে ব্যস্ত।

কুমড়া বড়ি গ্রামের পাশাপাশি শহরের মানুষের কাছে প্রিয় খাদ্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।  রাতে কনকনে শীত উপেক্ষা করে চলে বড়ি কোটার কাজ, আর সকালে সবাই মিলে সেই বড়ি জাল বা কাপড়ের উপর বসায়।

গ্রামের নারীরা জানান, ডাল সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন পরিস্কার পনিতে ধুয়ে নিতে হয়। এর আগে কুমড়া কেটে ভিতরের আশ বের করে সেই আশ ভাল ভাবে পানিতে ধুয়ে পরিস্কার করতে হয়। এরপর রাতে ঢেঁকি বা কলের মেশিনে তা কুটে প্রস্তুত করতে হয়। একটি বড়ি দুই দিন রোদে শুকানোর পর তা খাবারের জন্য উপযুক্ত হয়। তবে রোদের প্রভাব কম হলে বড়ি তার পরিপূর্ণতা পায়না। পাড়া মহল্লার গৃহবধুদের হাতে তৈরী এই বড়ি বর্তমানে দেশের শহর থেকে শুরু করে বিদেশেও যাচ্ছে বলে জানান অনেকে। তবে কুমড়ার তীব্র সংকট থাকায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন উপজেলার গৃহিণীরা।

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!