চোখ রাঙ্গাচ্ছে কাঁচা মরিচ। গত চারদিন ধরে ডাবল সেঞ্চুরীর ঘরে রয়েছে এর মূল্য। কোন ভাবেই এর দাম কমানো যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় এ মূল্য বৃদ্ধি। অপরদিকে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, ব্যবসায়ীরা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাড়িয়েছেন ঝালের দাম।
নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ গত চারদিন আগেও তারা প্রতিকেজি বিক্রি করেছেন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়।
সিমেট্রি রোডের কাঁচা মাল বিক্রেতা জয়দেব সাহা বলেন, কাঁচা মরিচের দাম গত চারদিন ধরে উর্ধ্বমুখী। এর আগে তিনি প্রতিকেজি ঝাল ১৪০ টাকায় বিক্রি করেছেন। দাম বৃদ্ধির কারণে এ পণ্যটির বিক্রিও কমে গেছে। তবে কি কারণে দাম বেড়েছে তা তিনি বলতে পারেননি।
একই এলাকার অপর ব্যবসায়ী নিকাশ রায় বলেন, আড়তে ঝালের দাম বেড়েছে। এক পাল্লা (৫ কেজি) কিনতে এখন ৯শ’ টাকা গুনতে হচ্ছে। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাজারে দেশী ঝালের আমদানি কম, তাই এর বাজার মূল্য বেশী। তিনি জিয়া ও বরজের ঝাল যথাক্রমে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি করছেন।
ময়লাপোতা সান্ধ্য বাজারের ব্যবসায়ী ছগির হোসেন জানান, গত চার মাস যাবত এলসির ঝাল পাওয়া যাচ্ছে না। অল্প অল্প করে বেড়েছে ঝালের দাম। সপ্তাহ খানেক আগে এলসির ঝাল বোঝাই কয়েকটি ট্রাক এসেছিল, সে সময় এর দাম কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন বাড়তি। এর হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে সকল স্থানে ঝালের চাষ হয় বৃষ্টির কারণে (যদিও এবছর বৃষ্টি কম) ওইসব অঞ্চলের গাছ মারা গেছে! ফলে ঝালের সংকট দেখা দিয়েছে। এর দাম কমাতে হলে ভারত থেকে ঝাল আমদানি করতে হবে। না হলে এর দাম আরও বেড়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
ট্রাক টার্মিনালস্থ ঝাল ব্যবসায়ী মো: কবির আহমেদ বলেন, চারদিন ধরে বাজার উর্ধ্বমুখী। তিনি প্রতিকেজি ঝাল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায় পাইকারী দরে বিক্রি করছেন। ফরিদপুর জেলা, মধুখালী ও বোয়ালমারী এলাকা থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয় এখানে। ওই এলাকায় কাঁচা মরিচের সংকট দেখা দিয়েছে। সংকটের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রতিবছর এ সময় বৃষ্টির কারণে গাছ মারা যায়। ফলে বৃদ্ধি পায় ঝালের দাম। অন্যান্য বছরে এ সময়ে ভারত থেকে ঝাল আমদানি করা হয়। কিন্তু এ বছর সেখানে দাম বেশী থাকায় কাঁচা মরিচ অনেকেই আনছেন না বলে তার দাবি।
সান্ধ্য বাজারের ক্রেতা সোহেল আহম্মেদ বলেন, প্রতিমাসে তার পরিবারে ১ কেজি কাঁচা মারিচের প্রয়োজন হয়। দাম বৃদ্ধির সংবাদ শুনে আজ আধাকেজি কিনেছেন। আমাদের দেশে যে জিনিষের দাম একবার বেড়ে যায় তা আর কমে না। প্রয়োজন বলেই কিনতে হচ্ছে। তবে এতো দাম বৃদ্ধি হওয়া ঠিক নয় বলে তিনি মনে করেন।
সিমেট্রি রোডে ক্রেতা শহিদুল জানান, আয় বাড়েনি কিন্তু ব্যয় বেড়েছে। দাম বাড়েনি এমন কোন জিনিষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর দাম বাড়ছে কেন তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।