নড়াইলের মুলিয়ায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকার চেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় সদর উপজেলার মুলিয়া বাজার এলাকায় শত শত নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধনে অনুষ্ঠিত হয়।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তৃতা করেন মুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী, হাড়িয়াখালী সরকারি প্রাইমারি স্কুলের সহকারি শিক্ষক ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের জেলা কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কল্যান বিশ্বাস, মুলিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান বিপুল কুমার শিকদার, মুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারি দীপক কুমার বিশ্বাস, মুলিয়া ইউপি মেম্বর অপূর্ব বিশ্বাস, শ্যামল কুমার বিশ্বাস প্রমূখ।
নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা জেলা বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক স্কুল শিক্ষক কল্যান বিশ্বাস অভিযোগে জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে সন্ত্রাসীরা আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্চিত করে হত্যার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে তারা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাকে আমার বাড়িতে ধরে নিয়ে গিয়ে বেতনের চেক বইয়ের একটি পাতায় ১১ লাখ টাকা লেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নিয়ে যায়। এ সময় তারা বলে বিষয়টি জানাজানি করা হলে তোকে হত্যা করে চিত্রা নদীতে ফেলে দেয়া হবে। বিষয়টি আমি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করি। এ ব্যাপারে গত ২৮ সেপ্টেম্বর নড়াইল সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। ঘটনার পর থেকে আমি আমার জীবননাশের হুমকি নিয়ে চলাফেরা করছি বলে জানান শিক্ষক কল্যান বিশ্বাস। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, জোরপূর্বক চেকে স্বাক্ষর নেয়ার প্রতিবাদে আজকের এ মানববন্ধন। অনেককে ভয়ভীতি দেখিয়ে এরা নীরবে চাঁদাবাজি করছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সন্ত্রাসীরা যে কোন মূহুর্তে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটাতে পারে বলে আমরা আশংকা করছি।
এ ব্যাপারে নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘রুপগঞ্জ এলাকার লিটন দত্ত তার কাছ থেকে বালির ব্যবসা জন্য ৯ লাখ টাকা নেন। লিটন পলাতক থাকায় তাকে হাজির করে দেওয়ার শর্তে তার চাচাতো শ্যালক কল্যানের কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা চেক নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে চেকটি মুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। কল্যানকে মারধর বা জীবন নাশের হুমকি দেওয়া হয়নি বলে জানান।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগের কথা শুনেছি। অভিযোগকারীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম/এমএম