তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে যশোর। শনিবার (২০ এপ্রিল) জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এদিন বাতাসের আর্দ্রতা ২৫ শতাংশ ছিল বলে জানিয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটিতে অবস্থিত আবহাওয়া অফিস।
তীব্র গরমে নাজেহাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের জনজীবন। ঘরে-বাইরে কোথাও যেন স্বস্তি মিলছে না। দাবদাহে জনশূন্য হয়ে পড়েছে যশোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। যে সকল সড়কগুলোতে শুক্রবার ব্যতীত অন্যান্য দিন মানুষের সমাগম এবং যানজট থাকে, সেসব সড়কে মানুষ ও যানবাহন কোনটিরই উপস্থিতি নেই।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিট স্ট্রোকে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও পাবনা শহরের রূপকথা রোডে হিট স্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জাকির হোসেন এবং পাবনা শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা সুকুমার দাস।
জানা গেছে, শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৭ টার দিকে মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন চুয়াডাঙ্গার জাকির হোসেন। পরে তাকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। নিহত জাকির দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেন ছেলে। তিনি পেশায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি ছিলেন।
নিহতের বাবা আমির হোসেন জানান, ‘রোদ গরমে মাঠের ধান মরার অবস্থা। ধানের জমিতে সেচ (পানি) দেয়ার জন্য জাকির সকাল ৭ টার দিকে মাঠে যায়। মাঠে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পর খবর পাই সে মাঠে স্ট্রোক করেছে। মাঠে থাকা অন্য কৃষকরা তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান জানান, শনিবার সকাল ৯ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫৮ শতাংশ এবং বেলা ১২ টায় চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। বিকেল ৩ টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রির ঘরে দাঁড়ায়।
অপরদিকে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিটস্ট্রোক করেন সুকুমার দাস (৬০)। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরমও) ডা. জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা ওই জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, কয়েকদিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজকে রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে, এ বছর এতো তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি। এ তাপমাত্রা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এখনই বলা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর অন্যান্য জেলার তথ্য নিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত জানানো হবে।’
খুলনা গেজেট/এএজে