ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত। তীব্র শীতে সবচেয়ে কাহিল হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে সিরাজগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ২২টি জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ দেশে শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবাহওয়া অধিদপ্তর।
আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। জেলায় প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশায় জনজীবন জবুথবু হয়ে পড়েছে। সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের তীব্রতার কারণে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে মাধ্যমিক পর্যায়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে শৈত্যপ্রবাহের কারণে সোমবার ১৪ জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এর মধ্যে রয়েছে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, পাবনা, মাদারীপুর, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুর ও নাটোর। অনেক জেলাতেই বুধবার পর্যন্ত শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জেট স্ট্রিম বা বায়ুপ্রবাহ বাংলাদেশের দিকে নেমে আসায় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা বাতাস ও কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো লম্বা সময় ধরে না থাকার কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি কমেছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, কাল বুধবার দেশের চার বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কাল দিনের বেলায় শীতের অনুভূতি কিছুটা বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ জেলাসহ রংপুর (আট জেলা) ও রাজশাহী (আট জেলা) বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি) বয়ে যায়। আজ কিছু জায়গায় তা মৃদু থেকে মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি) শৈত্যপ্রবাহে বিস্তার লাভ করতে পারে। ঢাকায়ও আজ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুর ও নওগাঁর বদলগাছীতে, ৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুড়িগ্রামের রাজারহাট, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও ডিমলায় এবং টাঙ্গাইলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রির নিচে।
ঢাকায় এক দিনের ব্যবধানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেছে ২.৩ ডিগ্রি। এখানে গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২.১ ডিগ্রি। চলতি মৌসুমে এটাই ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জেট স্ট্রিম বাংলাদেশের দিকে নেমে এসেছে। আমাদের দেশে বাতাস এখন মূলত উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসে। এই বাতাস অনেকটা পাইপের মতো। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা এই বাতাসের তাপমাত্রা অনেক কম থাকে। ফলে এটা যখন বাংলাদেশের দিকে নেমে আসে তখন তাপমাত্রা কমে যায়। আজও এই অবস্থা থাকতে পারে।’
আগামীকাল বুধবার ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে হালকা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এতে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, বৃষ্টির সময় দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। সে কারণে শীতের অনুভূতি কিছুটা বেশি মনে হতে পারে।
খুলনা গেজেট/ হিমালয়