মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের জেরে গত সপ্তাহে তাইওয়ানের চারদিকে সামরিক মহড়া শুরু করেছিল চীন। তাজা গোলাবর্ষণসহ চীনা সামরিক বাহিনীর এই মহড়া রোববার শেষ হওয়ার কথা ছিল।
তবে কথা থাকলেও মহড়া শেষ করেনি বেইজিং। বরং তার পরিসর আরও বাড়িয়েছে। আর এতেই নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের প্রতিবাদে তাইওয়ানের চারপাশে বেইজিংয়ের বৃহত্তম অনুশীলনের নির্ধারিত সমাপ্তির একদিন পর দ্বীপটির চারপাশে নতুন সামরিক মহড়ার ঘোষণা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সোমবার চীনের সামরিক বাহিনী বলেছে যে, তারা তাইওয়ানের আশপাশে সমুদ্র এবং আকাশে মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড চীনা সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েইবোতে বলেছে, চলমান এই মহড়ায় তারা সাবমেরিন বিরোধী হামলা এবং সমুদ্র অভিযান পরিচালনা করবে।
রয়টার্স বলছে, ন্যান্সি পেলোসির সফরের পর সোমবারই প্রথম এই ইস্যুতে প্রকাশ মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এদিন তিনি বলেন, তিনি তাইওয়ান নিয়ে চিন্তিত নন তবে এই অঞ্চলে চীনের কর্মকাণ্ড নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।
ডেলাওয়্যারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন যে তারা (চীন) যতটা পারছে ততটা এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমি মনে করি না যে তারা তাদের (সক্ষমতার) চেয়ে বেশি কিছু করতে যাচ্ছে।’
এদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পর চীনের সামরিক মহড়ার নিন্দা করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরেও। তিনি বলেন, ‘চীন উত্তেজনা বাড়াতে শুরু করার পর থেকেই আমরা তাদের নিন্দা করছি। তারা উস্কানিমূলক, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং ভুল হিসাবের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। এবং এটিই তিনি – প্রেসিডেন্ট বাইডেন – বলতে চেয়েছেন।’
মূলত মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের পর তাইওয়ানের কাছাকাছি এলাকায় নৌ ও বিমান বাহিনীর নজিরবিহীন মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে চীনা সামরিক বাহিনী। তবে কিছু নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকদের আশঙ্কা, মহড়ার মাধ্যমে হয়তো তাইওয়ানের প্রতিরক্ষার ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে বেইজিং।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের পরও চীনের সামরিক মহড়া চালিয়ে যাওয়ার এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, চীন (এই অঞ্চলে) ইচ্ছাকৃতভাবে সংকট তৈরি করছে। একইসঙ্গে বেইজিংকে সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করে (তাদের সীমানা) থেকে পিছু হটতেও’ আহ্বান জানিয়েছে দ্বীপটির মন্ত্রণালয়।
স্বশাসিত এই দ্বীপটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘চীনের সৃষ্টি করা সামরিক ভীতির মুখেও তাইওয়ান ভয় পাবে না বা পিছিয়ে যাবে না এবং আরও দৃঢ়ভাবে নিজের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক জীবনধারা রক্ষা করবে তাইপে।’