চীনের রাজধানী বেইজিংসহ দেশটির বিভিন্ন শহরের শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন রোগ। যাকে বলা হচ্ছে ‘রহস্যজনক নিউমোনিয়া’। নতুন এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের প্রথমে ইনফ্লুয়েঞ্জার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হচ্ছে শ্বাসকষ্ট, যা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের লক্ষণ। রহস্যময় এ রোগের ফলে আতঙ্কে রয়েছেন আক্রান্তের অভভাবকেরা।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ছড়িয়ে পড়া ‘রহস্যময় নিউমোনিয়া’ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতা বৃদ্ধি এবং শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ার ক্লাস্টার পরীক্ষা করার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য চীনের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে’।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই অনুরোধে বিপরীতে চীনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) এএফপি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে গত ১২ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, দেশজুড়ে এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ সময় করোনাকালে জনগণ যেসব বিধিনিষেধ মেনে চলতেন, অজানা এই নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে দেশের জনগণদের সেসব বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানান তারা।
জনস্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থা প্রোমেড ইতোমধ্যে এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনের শিশুদের মধ্যে বর্তমানে যে নিউমোনিয়া শুরু হয়েছে, সেটি কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তা এখনও নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।
ডব্লিউএইচওর মতে, গত তিন বছরের এই সময়ের তুলনায় অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে উত্তর চীনে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো অসুস্থতা’ বেড়েছে।
বেইজিং সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের ডেপুটি ডিরেক্টর ও প্রধান মহামারী বিশেষজ্ঞ ওয়াং কোয়ানি বুধবার রাষ্ট্র-চালিত গণমাধ্যম বেইজিং নিউজকে বলেছেন, চীনের রাজধানীতে ‘শ্বাসযন্ত্রের সংক্রামক রোগের প্রকোপ’ বেড়েছে।
ইতিমধ্যে আক্রান্তদের টিকা নেয়া এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে দূরে রাখতে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি মাস্ক পরাসহ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, চীনের রাজধানীতে বর্তমানে বেশ ঠান্ডা পড়ছে। শুক্রবারের (২৪ নভেম্বর) মধ্যে তাপমাত্রা শূন্যের নীচে নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া।
খুলনা গেজেট/ টিএ