বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের শৈলদাহ গুচ্ছগ্রামে সরকারি বন্দোবস্তকৃত জমি উপজেলা সাব-রেজিষ্টার রেজিষ্ট্রি দলিল করে দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারী) দুপুরে ওই জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় চারজন আহত হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় বুধবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানা যায়।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর ২০২০ ইং তারিখে চিতলমারী উপজেলা সাব-রেজিষ্টার এসএম শাহেদুল ইসলাম কলাতলা ইউনিয়নের শৈলদাহ মৌজার এসএ জেএল নম্বর-৬৮, বর্তমান-১১ নম্বর-এর ১/১৫০৫ নম্বর খতিয়ানের ডিপি ৭৮০ নম্বর খতিয়ানের ৩৩২৫/৬৮৮৯ ও ৩৩২৫/৬৮৫১ নম্বর দাগের বিলান ২২ শতক জমি রেজিষ্ট্রি দলিল করেন। যার দলিল নম্বর-১৮৮২/২০২০। দলিল দাতা শৈলদাহ গুচ্ছ গ্রামের মৃত বারিক শেখের স্ত্রী মোসা গোলেজান। গ্রহীতা একই গ্রামের মোসা. তাসলিমা বেগম। মঙ্গলবার দুপুরে ওই জমি দলখকে কেন্দ্র করে নাজমুল কাজী ও মোসাম্মাৎ গেলোজানের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ সময় মোসা. গোলেজান বেগম (৮৫) ও তার মেয়ে মোসা. তাসলিমা বেগম (৬০), পুত্রবধু ফাতেমা বেগম (৩৬) এবং ছেলে মো. সাহেব আলী (৪৫) গুরুতর আহত হন। রাতেই ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত মো. সাহেব আলী বলেন, ‘শৈলদাহ গুচ্ছ গ্রামের চরে সরকার আমার মাকে এক একর ২০ শতক জমি বন্দোবস্ত দিয়েছিল। সেই জমি থেকে আমার বোন তাসলিমাকে মা ২২ শতক জমি রেজিষ্ট্রি দলিল করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই জমি দখল নিতে প্রতিবেশী মো. নাজমুল কাজীর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন লোক লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় আমার বৃদ্ধা মা, বোন, স্ত্রী ও আমিসহ ৪ জন আহত হয়।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মো. নাজমুল কাজী হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘১০ থেকে ১২ বছর আগে গোলেজান ওই জমি মো. লুৎফুর কাজীর কাছে বিক্রি করেছিল। সেই জমি আমি ৬ মাস আগে ক্রয় করেছি। জমি আমার দখলে রয়েছে। গোলেজান এলাকায় একজন দাঙ্গা সৃষ্টিকারী ও মামলাবাজ মহিলা হিসেবে পরিচিত।’
জানতে চাইলে উপজেলা সাব-রেজিষ্টার এসএম শাহেদুল ইসলাম বুধবার দুপুরে খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘নিবন্ধন আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী কাগজপত্রের শুদ্ধতার ব্যাপারে সাব-রেজিষ্টারের কোন দায়ভার নেই। মোসা. গোলেজান বেগমের তার মেয়ে তাসলিমাকে হেবা দলিল করে দেন। দলিলের সময় প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র থাকায় ওই জমির দলিল দেওয়া হয়েছে। পরে জেনেছি প্রতারণার মাধ্যমে ওই দলিলের কিছু কাগজপত্র উপস্থাপন করা হয়েছিল। বিষয়টি আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তারাই এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।’
এ বিষয়ে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক খুলনা গেজেটকে জানান, ‘গুচ্ছগ্রামের গোলেজান বেগম ও তার ছেলে-মেয়েদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়েরের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
খুলনা গেজেট / এআর