বাগেরহাটের চিতলমারী থানায় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (মেম্বার) অপূর্ব মন্ডলের বিরুদ্ধে এক কলেজ ছাত্রীর (১৯) শ্লীলতাহানীর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (০৩ জুন) রাতে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রভাবশালী ওই মেম্বার ও তার লোকজন কলেজ ছাত্রীর পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। তাদের হুমকি-ধামকিতে গোটা পরিবারের সদস্যরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। রবিবার (০৪ জুন) দুপুরে কলেজ ছাত্রীর মা সাংবাদিকদের এসব কথা জানিয়েছেন। অপূর্ব মন্ডল উপজেলার চরবানিয়ারী বাওয়ালীপাড়া গ্রামের মৃত ব্রজেন্দ্র নাথ মন্ডলের ছেলে ও চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য।
কলেজ ছাত্রীর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কলেজে যাওয়া-আসার পথে দীঘদিন ধরে অপূর্ব মেম্বার আমার মেয়েকে উত্যক্তসহ কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ ধরনের কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে তাকে অনেক বার অনুরোধ করি। আমার কথায় কর্ণপাত না করে সে মেয়েকে বিভিন্ন প্রকার ক্ষয়ক্ষতির হুমকি দেয়। গত ২ জুন বেলা সাড়ে ১২ টার সময় আমি এবং আমার মেয়ে বিষয়টি স্থানীয় মাতুব্বর রমেশ বিশ্বাসকে জানানোর জন্য তার বাড়ির দিকে রওনা হই। রমেশ বিশ্বাসের বাড়ির সামনে পৌঁছালে আগে থেকে সেখানে হাতে বাশের লাঠি নিয়ে অবস্থানরত অপূর্ব মন্ডল (৩৬) ও তার ভাই নিমাই মন্ডল (৪০) আমার এবং আমার মেয়ের পথরোধ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তখন আমি তাদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তারা আমাদের উপর আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। অপূর্ব তার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার সারা শরীরে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে। তখন আমার মেয়ে আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে অপূর্ব আমার মেয়ের পরনে থাকা কাপড়-চোপড় এবং নিমাই আমার পরনের কাপড়-চোপড় টানা-হেঁচড়া করে আমাদের শ্লীলতাহানি ঘটায়। লোকজন আমাকে উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এসব ঘটনার বিচার চেয়ে ৩ জুন রাতে আমি বাদী হয়ে অপূর্ব মন্ডল ও তার ভাই নিমাই মন্ডলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। অভিযোগ দায়েরের পর থেকে প্রভাবশালী ওই মেম্বার ও তার লোকজন আমাদের নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তাদের হুমকি-ধামকিতে আমরা গোটা পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি।’
চরবানিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য অপূর্ব মন্ডল সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। ওই মেয়ের ভাইকে একটি ঘটনায় শাসানোর কারণে এ অভিযোগ করেছে।’
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান সাংবাদিকদের জানান, কলেজ ছাত্রীর মা অপূর্ব মন্ডল ও তার ভাই নিমাই মন্ডলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম