বাগেরহাটে চিতলমারীতে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে ফেসবুকে কলেজ ছাত্রী’র অবমাননাকর পোস্ট এবং থানায় হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামিম হাওলাদার বাদী হয়ে ৫৯ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামী দিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে ফেসবুকে কটুক্তি এবং অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় শেরে বাংলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ রুবেল মুন্সি বাদী হয়ে কলেজ ছাত্রী রনিত বালা রনিকে আসামী করে মামলাটি করেছেন। ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বাগেরহাট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, চিতলমারী উপজেলার চরডাকাতিয়া গ্রামের রমনি বালা’র মেয়ে শেরে বাংলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রনিত বালা রনি (১৮) তার ‘রনিত বালা রনি’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে কটুক্তি ও অবমাননা করে পোস্ট দেয়। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে রবিবার রাতে চিতলমারী পুলিশ রনিত বালা রনিকে তার ব্যবহৃত মোবাইলসহ আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কলেজ ছাত্রী রনি জানায় তার আইডি হ্যাক করে অন্য কেউ এ ধরণের পোস্ট দিয়েছে। সোমবার ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে কটুক্তি ও অবমাননাকর পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টার দিকে উত্তেজিত জনতা চিতলমারী থানার সামনে জড়ো হয়ে কলেজ ছাত্রী রনি’র বিচারের দাবী জানাতে থাকে। এ সময় শেরে বাংলা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল থানার সামনে পৌঁছালে উত্তেজিত জনতা চিতলমারী থানা ভবনকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে তাঁরা থানা কম্পাউন্ডে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও থানার পিকআপ, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি এবং ৬-৭ টি মোটরসাইকেলসহ থানার জানালার কাঁচ ও আসবাবপত্র ভাংচুর করেছে। উত্তেজিত জনতার হামলায় ওসিসহ ১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় পুলিশ সরকারী সম্পদ রক্ষা ও উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ২৪ রাউন্ড সর্টগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রনে আছে। বাকি আসামীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ সব সময়ই সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছে। ঘটনার শুরু থেকে আমি বার বার স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে বিষয়টি অবহিত করেছি। কিন্তু তাঁরা আমাদের কোন সহযোগিতা করেননি। তাঁরা ঘটনার গুরুত্ব দিলে এত বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত না।’
চিতলমারী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা. মামুন হাসান জানান, সোমবার দুপুরে ধর্ম ও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে ফেসবুকে কটুক্তি ও অবমাননাকর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘংর্ষে গুলিবিদ্ধ ১০ জনকে চিতলমারী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এদের অধিকাংশই সর্টগানের গুলিতে আহত হয়। অন্যদিকে থানায় গিয়ে আহত ১২ জন পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ