খুলনার চালনা পৌরসভা নির্বাচনে পৌরমেয়র পদে সনত কুমার বিশ্বাসকে আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দাকোপ উপজেলা আওয়ামী লীগের নিজস্ব কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরমেয়র সনত কুমার বিশ্বাসকে দলের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার জন্য সুপারিশ জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চালনা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম (আক্কেল)।
মো. সফিকুল ইসলাম খুলনা গেজেটকে জানান, উপজেলা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের মধ্যে আর কোনো নেতা দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী না থাকায় সনত বিশ্বাসের নাম একমাত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বৈঠকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁর নাম সুপারিশ করে জেলায় আবেদন পাঠানো হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী অচিন্ত্য কুমার মণ্ডলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ সংগঠন হওয়ায় যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারে। তবে দলীয় নেতা-কর্মী না হওয়ায় তাঁর পক্ষে কোনো প্রকার সুপারিশ আমরা করতে পারি না।
সফিকুল আরও বলেন, অচিন্ত্য মণ্ডল আওয়ামী লীগের কেউ না। তিনি আওয়ামী লীগ ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী স্থানীয় সাবেক সাংসদ ননীগোপাল মণ্ডলের অনুসারী। গত নির্বাচনে অচিন্ত্য মণ্ডল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিল।
স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান শেখ গত নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত বিজয়ী মেয়র প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক পৌরমেয়র অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল দ্বিতীয় হন। আর সনত কুমার বিশ্বাস গত নির্বাচনে দাকোপ আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সনত বিশ্বাস জয়ী হন। তাই এবারও তৃণমূল থেকে তাঁর নাম সুপারিশ করে জেলা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে কেন্দ্র পাঠানো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক পৌরমেয়র অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল খুলনা গেজেটকে বলেন, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আবেদনপত্রটি স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রহণ করেননি। পরে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে আবেদন করেছি। এখন তাঁরাই সিদ্ধান্ত নিবেন কে কিভাবে দলীয় মনোনয়ন পাবেন। তিনি আরও জানান, পৌর নির্বাচন ছাড়াও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলাম।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিৎ অধিকারী মুঠোফোনে খুলনা গেজেটকে বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বৈঠক করে প্রার্থী নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবে সুপারিশের কোনো আবেদন হাতে পায়নি। অন্যদিকে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ে একটি আবেদন করেছিল সাবেক পৌরমেয়র অচিন্ত্য মণ্ডল। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সেটি আমলে না নেওয়ায় আমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলীয় সুপারিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই দুই জনের নাম উল্লেখ করে কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হবে। এরপর কে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে, তা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সিদ্ধান্ত নিবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
খুলনা গেজেট / কেএম