খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে
বিত্তবান‌দের এ‌গি‌য়ে আসার আহবান

চামড়ার দর পত‌নে হতাশা ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোরবানীর পশুর চামড়া দ্বীনি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দান করেন সকলেই। দ্বীনি প্রতিষ্ঠানসমূহের অর্থ সংস্থানের অন্যতম মৌসুম তাই ঈদুল আযহা। করোনা পরিস্থিতির কারণে দৈন্যদশা বৃদ্ধি ও পশুর চামড়ার রেকর্ড পরিমাণ মূল্য হ্রাসে এবারের ঈদে হাসি ফুটছে না দ্বীনি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে। চরম হতাশা ব্যক্ত করছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। গত ২২ জুলাই চামড়ার মূল্য বৃদ্ধি ও কওমি মাদ্রাসা খুলে দেবার দাবিতে মানববন্ধন করেছিল জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ।

খুলনার বাগমারাস্থ মারকাজুল উলুম মাদ্রাসার মোহতামীম মুফতী আব্দুল্লাহ্ ইয়াহহিয়া বলেন, বিত্তবানদের দানকৃত অর্থ ও কোরবানীর পশুর চামড়া বিক্রির অর্থ দিয়ে মারকাজুল উলূম মাদরাসার লিল্লাহ বোডিংয়ের সহস্রাধিক কোরআন শিক্ষার্থীর সারাবছর রিজিকের বন্দোবস্ত হয়ে থাকে। করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই; সে কারণে দান প্রাপ্তির অনেক কমেছে। এ অবস্থায় কোরবানীর ঈদ, তবে চামড়ার মূল্য পানির চেয়েও সস্তা। এক লিটার কোমলপানীর দাম ৬৫টাকা আর এক বর্গফুট গরুর লবনযুক্ত চামড়ার মূল্য সর্বোচ্চ ৩৫টাকা। তাহলে একটি চামড়ার ক’টাকাই বা মূল্য পাওয়া যাবে? মাদ্রাসা পরিচালনায় প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা ঋণী হচ্ছি। মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে দু’চোখে গড়িয়ে পড়া অশ্র“ মুছলেন তিনি। দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলোতে হৃদয়বান বিত্তশীলদের দানের হাত প্রসারিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি মুফতি গোলামুর রহমান বলেন, ‘সবকিছুর মূল্য যখন আকাশচুম্বী, তখন কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নিম্নমুখী। দুই হাজার টাকা মূল্যের চামড়া এখন দুইশ’ টাকায়ও বিক্রি হয় না। গার্মেন্টস ও পাটশিল্পের মতো চামড়া শিল্পের বাজারও অন্য দেশের হাতে চলে যাচ্ছে। কোরবানীর পশুর চামড়া গরীবের হক, দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এই দান প্রাপ্তি উপযুক্তস্থল। কিন্তু বছরের পর পর চামড়ার মূল্য কমিয়ে এতিমদের মুখের খাবার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এটা দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের একটা সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র নয় তো? খুলনার দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চরম অর্থনৈতিক সংকটে; এ মুহুর্তে সকলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করুন। কোরআনের হাফেজদের রুজি দান করুন।’

নগরীর গোয়ালখালীস্থ জামি’আ রশীদিয়া ক্যাডেট স্কিম মাদরাসার আদর্শ হিফজ বিভাগে একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে হিফজ বিভাগ চালু হয়েছে। পূর্বের মতো নিরাপদ অর্থ সংস্থান নেই। এবারের কোরবানীতেও কিছু আয় হবে বলে মনে হয় না। অনুরুপ অনিশ্চিয়তা প্রকাশ করেছেন খুলনা দারুল উলুম, খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা, চানমারি আহমাদিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ/মোহতামিমরা।

খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের মহাসচিব মাওলানা গোলাম কিবরিয়া বলেন, কোরবানীর পশুর চামড়া মাদ্রাসাগুলোর অর্থ সংস্থানের অন্যতম উৎস। চামড়ার দাম না থাকায় এবারের ঈদে হাসি ফুটবে না দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মুখে। ধনীরা এগিয়ে আসলে দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলোবাঁচবে। প্রসঙ্গত্ব, ২০১৪ সালে দেশে কোরবানির ঈদে গরুর চামড়ার বর্গফুট প্রতি দাম ছিল ৭০-৭৫টাকা। চলতি বছর তা নেমে এসেছে ৩৫-৪০টাকায়। অর্থাৎ ৬ বছরের ব্যবধানে দেশে গরুর চামড়ার দাম ৫০ শতাংশ কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। আর গত বছরের তুলনায় দাম কমেছে ২৯ শতাংশ। পশুর চামড়ার মুল্য হ্রাসে সরাসরি প্রভাব পড়বে মাদ্রাসা, হেফজখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানাগুলোতে।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!