১৭৫ বছরের পুরনো চা বাগানের কর্মী রূপ নিয়ে দুই দেশের অধিনায়ক ট্রফি নিয়ে তুললেন ছবি। মাথায় প্যাঁচানো কাপড়, পিঠে ঝুড়ি, গায়ে স্থানীয় পোশাকে চা শ্রমিক হয়ে সেজেছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। অন্যদিকে ব্যতিক্রম হয়নি আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক লুইসও। তিনিও সেজেছেন একই রূপে।
এর আগে ২০২২, মেয়েদের এশিয়া কাপের ট্রফি উন্মোচন হয়েছিল চা বাগানে। ছেলেদের সিরিজেও এর আগে চা বাগানে ট্রফি উন্মোচনের আয়োজন দেখা গেছে। তবে প্রতিবারই নিজ নিজ দলের জার্সি গায়ে ছিলেন ক্রিকেটাররা।
পুরোদস্তুর চা শ্রমিক সেজে সবুজ বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরার ঘটনা এবারই প্রথম। এমন ব্যতিক্রমী ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন হৃদয় ছুঁয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়কের।
বৃহস্পতিবার সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় দুপুর ২টায়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ যথাক্রমে ৭ ও ৯ই ডিসেম্বর। এমন শিরোপা যে তিনি হাতছাড়া করতে চান না।
এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল্যান্ড নারী দলকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ নারী দল। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে এবার টি-টোয়েন্টিতে নামছে বাংলাদেশের মেয়ারা। ওয়ানডের মতো দাপটের সঙ্গে সিরিজ জিততে চান নিগার সুলতানা জ্যোতি।
জ্যোতি বলেন, ‘অবশ্যই এটা (চা বাগানে ট্রফি উন্মোচন) বিশেষ। এর আগে ছেলেদের ক্রিকেটে চা-বাগানের ভেতর করা হয়েছে ফটোসেশন। তবে বিশেষ পোশাক পরে ঐতিহ্যগতভাবে এমন কল্পনার বাইরে আমার কাছে। খুব ভালো উদ্যোগ। এটা হয়তো ভিন্নভাবে মেয়েদের ক্রিকেটকে আরও বেশি তুলে ধরবে। সিরিজ জেতার তো চিন্তা থাকবেই। এখন আমরা অন্যরকম এক ছন্দে আছি। এই মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারলে দলের জন্য ভালো হবে।’
অন্যদিকে আইরিশদের বিপক্ষে মুখোমুখি পরিসংখ্যানে পরিষ্কারভাবে এগিয়ে বাংলাদেশ। দুইদলের ১১ সাক্ষাতে বাংলাদেশের জয় ৮টি, বাকি ৩টি আয়ারল্যান্ডের। সবশেষ সাত ম্যাচের ছয়টিতেই জয়ী দলের নাম বাংলাদেশ। তবে ঘরের মাঠে সবশেষ দুই সিরিজে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ জিতেছে আইরিশরা।
এছাড়া ২০২২ উপমহাদেশে খেলা সবশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজে পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে তারা। তাই ছন্দে থাকলেও নির্ভার হতে চান না নীগার। আয়ারল্যান্ডের সাম্প্রতিক ছন্দের পাশাপাশি ওয়ানডে সিরিজের ধারাবাহিক উন্নতি মাথায় রেখে নিজেদের সেরাটাই খেলতে চান।
তিনি বলেন, ‘আমি অনেক বেশি ইতিবাচক। আত্মবিশ্বাসী আছি, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী নই। কারণ আমি চিন্তা করি আমাদের এমন একটা দল যে দল-ওয়াইজ পারফর্ম করলে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নেমেই জিতে যাবো তা কিন্তু না, বেটার ক্রিকেট খেলতে হবে। প্রথমত, ওয়ানডে তারা ভিন্নভাবে খেলেছে হয়তো বা, কন্ডিশন ভিন্ন ছিল। সেকেন্ড ওয়ানডেতে তারা ভালো ব্যাট করেছে, থার্ডও ভালো ব্যাট করেছে। হালকভাবে নেওয়ার কোনো চিন্তা ভাবনা নেই। কারণ প্রথমত, ওয়ানডে তারা ভিন্নভাবে খেলেছে, হয়তো কন্ডিশন তাদের কাছে ভিন্ন ছিল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তারা ভালো ব্যাট করেছে, শেষ ম্যাচেও ভালো ব্যাট করেছে। তাই হালকাভাবে নেয়ার কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই।’
আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০তে জেতার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এবার বিশ ওভারের ক্রিকেটেও ভালো করার আশা বাংলাদেশ অধিনায়কের। বিশেষ করে সিলেটের মাঠ তাদের আশা দেখাচ্ছে। কারণ নারী দলের বেশির ভাগ সময়টা কাটে এ মাঠেই। তাই বলে প্রতিপক্ষকে হালকা করে নেয়ার সুযোগ নেই সেই বাস্তবতাও জানেন নীগার সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘আমরা সিলেটেই বেশি খেলি। এখানের উইকেট অনেক ভালো হয়। কোনো কিছু হালকাভাবে নেওয়ার কিছু নেই। ম্যাচ বাই ম্যাচ পরিকল্পনা করে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।’
অন্যদিকে নিজের দল নিয়েও বেশ আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি দলে অনেক বদল আছে। সুপ্তা আপু অনেক ভালো খেলার কারণে তার ইন্টেন্ট ভিন্ন ছিল তাকে এজন্য টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ দেয়া হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী দল নিয়ে। খেলোয়াড়রা ভালো টাচে আছে, গুরুত্বপূর্ণ হলো- আমাদের ওই ধারাবাহিকতা থাকবে কিনা। ভিন্ন সংস্করণ, ভিন্ন কন্ডিশন। অবশ্যই আমাকে চিন্তা-ভাবনা করে খেলতে হবে। প্রথম ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচ ভালো খেলে পুরো সিরিজে এর প্রভাব থাকবে।’
খুলনা গেজেট/এমএম