গাজীপুরের সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম চরমোনাই পীরের দরবার শরিফে গিয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পরাজিত মেয়র প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন।
সোমবার (১২ জুন) ভোট চলাকালে হামলার শিকার ফয়জুল করীমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং সমবেদনা জানান আওয়ামী লীগের বরখাস্ত এই নেতা জাহাঙ্গীর। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুই নেতা একান্তে কিছু সময় বৈঠকও করেন।
চরমোনাই মিডিয়া গ্রুপের সদস্য ও ইসলামী যুব আন্দোলনের বরিশাল মহানগরের সভাপতি এস এম সানাউল্লাহ শুক্রবার (১৬ জুন) রাতে বলেন, “রাত ১১টায় গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম চরমোনাই দরবার শরীফে এসে পৌঁছান। এক ঘণ্টার মত তিনি এখানে অবস্থান করেছিলেন।
“তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রার্থী মুফতী ফয়জুল করীমের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিয়েছেন। জাহাঙ্গীর আলম ও মুফতী ফয়জুল করীম একান্তে কথা বলেছেন।
তবে তাদের মধ্যে কী বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে সেই বিষয়ে কিছু জানেন না জানিয়ে সানাউল্লাহ বলেন, “মুফতী ফয়জুলের কক্ষ থেকে বেরিয়ে জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুরে ফিরে গেছেন।”
তবে এ বিষয়ে জানতে মুফতী ফয়জুল করিমের মোবাইলে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইলে কল করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র পদপ্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমানকে মোবাইল করলে তিনি সাড়া দেননি।
তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজীপুর মহানগরের প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক এস এম ওয়াহিদুল ইসলামও রাতে জাহাঙ্গীর আলমের চরমোনাই পীরের দরবার শরিফে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “জাহাঙ্গীর আলম সাহেব এর আগেও তো দরবার শরিফে গিয়েছেন। কাল রাতে তিনি তার মত করে লোকজনকে নিয়ে সেখানে গিয়েছেন। আমাদের ঊর্ধ্বতন কেউ যায়নি।
জাহাঙ্গীর কেন জন্য গিয়েছেন, কিছু জানেন কি-না জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, “হুজুরের (ফয়জুল করীম) উপর হামলার পর তো অনেকেই গেছেন। তিনিও গেছেন উনাকে সমবেদনা জানাতে। সৌজন্য সাক্ষাত বলতে পারেন। ছবিও আছে।
জাহাঙ্গীর আলম ও সৈয়দ মুফতী ফয়জুল করীমের সাক্ষাতের ছবিটি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় হাতপাখার প্রতীকের প্রচারে জন্য তৈরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকের পেইজে রয়েছে।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম এবারও দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। দলের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ও তার মা জায়েদা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের জামিনদার হওয়ায় প্রার্থিতা বাতিলের পর জাহাঙ্গীর তার মায়ের টেবিল ঘড়ি প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনে সামনে। সেই নির্বাচনে নৌকাকে ডুবিয়ে জায়েদা খাতুন গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হন।
অপরদিকে বরিশালে ভোট চলাকালে ৩০-৪০ জন নৌকার সমর্থক কেন্দ্রের বাইরে হামলা করে বলে অভিযোগ করেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতী ফয়জুল করীম। এতে তার মুখ রক্তাক্ত হয়।
এ ঘটনার পর ইসলামী আন্দোলন বরিশাল ও খুলনা সিটির ফলাফল বর্জন করে এবং সিলেট ও রাজশাহী থেকে তাদের প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
এ ঘটনার বিচার দাবি করে দলটি শুক্রবার জমার পর সারাদেশে বিক্ষোভ করেছে।