বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সুরশাইল (ওয়াপদাপাড়া) গ্রাম। এখানে বাস করেন নিম্ন আয়ের ১৫টি পরিবার। তাদের আলোকিত করতে সরকার লাখো টাকা ব্যয়ে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করেন। কিন্তু এক প্রভাবশালীর অহেতুক বাধার কারণে দুই বছর ধরে তারা বিদ্যুৎ বশ্চিত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে গত ৯ ও ১০ মে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেন বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে অবহেলিত ১৫ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেন ‘চিতলমারী আলোর গেরিলা টিম’। দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার পর বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়ে ওই পরিবার গুলোতে বইছে আনন্দের বন্যা। রবিবার (১৬ মে) দুপুরে এমনটাই জানালেন বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া সুরশাইল (ওয়াপদাপাড়া) গ্রামের সেকেন্দার আলী শেখ (৬৮)।
তিনি ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৬০) আরও বলেন, বিদ্যুতের আলোতে আমাদের পাড়া এখন আলোকিত। সন্ধ্যার পর আর ভূতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়না। শেষ বয়সে গরমে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাস খাচ্ছি। মরণের আগে বিদ্যুৎ পাব এমন আশা ছিলনা। ঈদের সাথে আমাদের পাড়ায় বিদ্যুতের আলো আসায় সত্যিই আনন্দের বন্যা বইছে। আমরা এ জন্য প্রধানমন্ত্রী, বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও সাংবাদিকদের দোয়া করি।
এ পাড়ার শিশু শিক্ষার্থী মুরাদ খান, আশিক শেখ, মাহিন খান, লামিয়া আক্তার ও ফারজানা জানায়, ঘরে বিদ্যুতের আলো আসায় তারা মহাখুশি। তাদের এখন আর কেরোসিনের মিটমিটে আলোতে বই পড়তে হবে না।
ইলেট্রিশিয়ান হেফাজ মোল্লা বলেন, ২০১৯ সালে ওই পাড়ায় বৈদ্যুতিক লাইনের কাজ শুরু হয়। স্থানীয় এক প্রভাবশালী কাজটি বাধা দেয়ায় ওখানের ১৫ টি পরিবার দুই বছর ধরে বিদ্যুৎ বঞ্চিত ছিল। ওই পরিবার গুলো বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় আমি খুব খুশি হয়েছি।
এ ব্যাপারে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চিতলমারী জোনাল অফিসের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) কাউছার আহম্মেদ বলেন, আমরা চিতলমারী আলোর গেরিলা টিম ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাতদিন কাজ করার পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৫টি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দিয়েছি।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চিতলমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) শেখ আব্দুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। ঠিকাদার কাজ করার সময় বাধা দেয়ায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। আলোর ফেরিওয়ালার মাধ্যমে চিতলমারী আলোর গেরিলা টিম ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুনরায় লাইন স্থাপন করে ওখানের ১৫ টি পরিবারকে আলোকিত করেছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই