দোকান দখলকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে স্থানীয় ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা। এতে পাঁচজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিং এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফ ও ইকবালের সঙ্গে ব্যবসায়ী শাহিনের ক্যাম্পাসে ব্যবসা নিয়ে পূর্ব শত্রুতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল স্টেশন এলাকায় শাহিনের দোকান দখলকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ। রাতে ৪ টার দিকে হানিফের লোকজন দোকান দখল করতে আসে। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ করে ও দোকান ভাঙচুর করে।
এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপে বিভিন্ন পোস্ট দেয়। তারা পোস্টে উল্লেখ করে যে ‘স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে আসছে’। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে রেলক্রসিং এলাকার দিকে যায়। এসময় স্থানীয়রা এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা তাদের দিকে হামলার জন্য আসছে। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা রেলক্রসিং এলাকায় ব্যারিকেড দেয়। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এসময় ইট পাটকেল নিক্ষেপ হয়। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যুবলীগ নেতা হানিফের রেলক্রসিং এলাকায় ওয়াইফাই ও ডিশের দোকান ভাঙচুর করে।
এসময় পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। জানা গেছে হাটহাজারী থানা থেকে আসা পুলিশকে আটকে দেয় স্থানীয়রা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় পুলিশকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলি ওবায়দুল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী রেল স্টেশন সংলগ্ন আপ্যায়ন ঘর নামে একটি দোকান পরিচালনা করত। গত রাত সাড়ে ৩টার দিকে এই দোকানটি দখল করতে আসে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময়ে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এতে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা সকালে রেল ক্রসিংয়ের দিকে মিছিল নিয়ে গেলে তারা আবার আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা এ সময়ে পুলিশ বারবার ফোন করেছি কিন্তু পুলিশ তেমন সহযোগিতা করেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসক ডা. আবু তৈয়ব জানান, পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় মেডিকেলে এসেছে। তারা ইটপাটকেলের আঘাতে আহত হয়েছে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, স্থানীয় দুই ব্যাবসায়ীর দ্বন্দ্বে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ করেন৷ এ সময়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা হল থেকে বের হয়ে রেল ক্রসিংয়ের দিকে গেলে তারা আবার ককটেল বিস্ফোরণ করেন। এ সময়ে পুলিশলের সহযোগিতা তেমন পায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিং এলাকায় যুবলীগ নেতা হানিফের নেতৃত্বে স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ডিশ, ওয়াইফাইয়ের ব্যবসা করে। হানিফ ও ইকবালের নামে হাটহাজারী থানায় পুলিশের বেশ কয়েকটি মামলাও আছে।
খুলনা গেজেট/এনএম