দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবার ওপর হামলার ঘটনায় ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘ওসি আমিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে দিনাজপুর পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে।’
গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মই বেয়ে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এ সময় ইউএনওর চিৎকার শুনে পাশের কক্ষে থাকা তাঁর বাবা ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাঁকেও আঘাতে জখম করে। পরে কোয়ার্টারের অন্য বাসিন্দারা তাঁদের চিৎকার শুনে পুলিশকে খবর দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওয়াহিদা খানমকে ঢাকায় আনা হয়।রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। সবশেষ জানা গেছে, তাঁর সেরে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী চিকিৎসকরা।
এই ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বড় ভাই শেখ আরিফ হোসেন বাদী হয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব)-১৩ পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মামলায় মো. নবিরুল ইসলাম (৩৫) ও সান্টু কুমার বিশ্বাস (২৮) ছাড়াও ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের সদস্য আসাদুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। নবিরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে আজ শুক্রবার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হবে বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর দিনাজপুরের হাকিমপুর, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ এবং র্যাব-১৩-এর একটি দল যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার ভোরে হিলির কালীগঞ্জ এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে আসাদুল ইসলামকে আটক করে। আর রংমিস্ত্রি মো. নবিরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে শুক্রবার ঘোড়াঘাট থেকে আটক করা হয়।
এ ছাড়া এই ঘটনায় ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলমকেও গত শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানায় র্যাব।
খুলনা গেজেট / এমএম