ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে দিনভর ঝড়ো হাওয়া বইছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলে। সেই সাথে থেমে থেমে হচ্ছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করায় উপকূলজুড়ে আতংকে রয়েছে মানুষ। মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দওে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় উত্তোলন করা হয়েছে বিপদ সংকেতের পতাকা।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ইতিমধ্যে মোংলা ও পায়রা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে সাতক্ষীরা শহরসহ উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বইছে। সেই সাথে বৃষ্টিও হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৩-৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শংকা রয়েছে। এ পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ৩০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হওয়ার তথ্য রেকর্ড হয়েছে। যা উপকূলীয় এলাকায় কিছুটা বেশি।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শ্যামনগর উপজেলার কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া ও চুনা নদীতে জোয়ারের পানি ১-২ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে আতংকে রয়েছে উপকূলের মানুষ।
শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ১৬৩টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া পর্যন্ত পরিমান শুকনা খাবার মওজুত রয়েছে। জানমালের নিরাপত্তার জন্য ২ হাজার ৮শর বেশি সিপিপি সদস্য ও ২ হাজারের মত বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সদস্য প্রস্তুত রয়েছে।
উপকূলের সংবাদ কর্মী এম জুবায়ের মাহমুদ জানান, উপজেলার ভেটখালি, হরিনগর, মুন্সিগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী অনেক এলকার বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। এজন্য এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের রুহুল আমিন মোড়ল জানান, এই এলাকায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাড়িবাঁধ খুবই ঝুকিপূর্ণ। যে কারণে কোন ঘুর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস শুনলেই আমরা উপকূলবাসী আতংকে থাকি। তিনি আরো বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে দিনভর উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বইছে। সেই সাথে ছিল গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। দুপুরের জোয়ারে খোলপেটুয়া নদীতে জোয়ারের পানি কিছুটা বৃদ্ধি পায়। বিছট মোড়ল বাড়ি এলাকায় বেড়িবাঁধ ঝুকিপূর্ণ থাকলেও তেমন কোন সমস্যা হয়নি। তবে বিকালে সাড়ে চারটা নাগাদ ঝড়ো হাওয়া কিছুটা কমেছে। থেমে গেছে বৃষ্টি। ক্রমেই পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে।
শ্যামনগরে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, শ্যামনগরে ৩৬০ কিলোমিটারের মত বেড়িবাঁধ আছে। এর মধ্যে ৫টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ। কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে কাজ চলছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ