প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে যশোরের ৩ হাজার ৭৪ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই রয়েছে সবজী ক্ষেত। এ তথ্য জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে রোববার সারাদিন যশোরে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। সেই সাথে রাত থেকেই ঘূর্ণিঝড় হয়। রাত বৃদ্ধির সাথে সাথে শুরু হয় মুষলধারের বৃষ্টি। এই ঝড়-বৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষেত। যার পরিমাণ ৩ হাজার ৭৪ হেক্টর। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ১হাজার ৪২৯ হেক্টর জমির সবজী ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে সবজীর মাচা ভেঙ্গে ও বৃষ্টির পানিতে ডুবে সবজী ক্ষেত নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ে যশোরে সবজি, কলা, আম, তিল, পেঁপে, মুগ, মরিচ, লেবু ক্ষেত ও পাট, লিচু আক্রান্ত হয়েছে। চলতি মৌসুমে যশোরে ১৪ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে সবজি, ৫৮৭ হেক্টর কলা, তিন হাজার ৯২৪ হেক্টর আম, ১ হাজার ৬৮০ হেক্টর তিল, ৫৫৯ হেক্টর পেঁপে, ৫১৫ হেক্টর মুগ, ৪৩৫ হেক্টর মরিচ, ২৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর পাট, ৬৪১ হেক্টর লিচু ও ১৪৮ হেক্টর জমিতে লেবুর চাষ হয়েছে।
এসবের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৭৪ হেক্টর জমির ফসল। এরমধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৪২৯ হেক্টর জমির সবজি, ৬৭ হেক্টর জমির কলা, ১১৪ হেক্টর জমির আম, ৩৩১ হেক্টর জমির তিল, ২৬ হেক্টর জমির পেঁপে, ৩৬ হেক্টর জমির মুগ, ৬০ হেক্টর জমির মরিচ, ৯৭২ হেক্টর জমির পাট, ৩৬ হেক্টর জমির লিচু ও তিন হেক্টর জমির লেবু ক্ষেত।
এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডক্টর সুশান্ত কুমার তরফদার।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরই আক্রান্ত হয়েছে কী পরিমাণ জমির ফসল আগে সেটি নিরূপণ করা হয়। এরপর তা থেকে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে চাষিরা বলছেন, এ বছর ফসলে যেন শনির দশা লেগেছে। ধান বাদে অন্যসব ফসল ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। এক মাসের বেশি সময় ধরে তীব্র তাপদাহের কারণে ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আম ও লিচু গাছ থেকে ঝরে গেছে। একইসাথে কমেছে রসালো ভাবও। দ্বিতীয় দফায় ঝরেছে ঝড়ে।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান আলী জানিয়েছেন, চাষির করলা, উচ্ছে, লাউসহ বিভিন্ন ফসলের মাচার ভেঙে পড়েছে। এসব মাচান ফের তৈরি করতে হবে।
তাপদাহের কারণে সবজির বাজারে একদফা প্রভাব পড়েছে। আর ঝড়ের কারণে দ্বিতীয় দফায় প্রভাব পড়তে পারে বাজারে-এমন আশঙ্কা বিক্রেতাদের।
খুলনা গেজেট/এএজে