বাড়তি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় শত কোটি হাতিয়ে নিয়ে স্বপরিবারে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাতক্ষীরার প্রগতি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক প্রাণনাথ দাসকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। পালিয়ে গিয়ে ভারতে আটক হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগের পর দেশে ফিরলে শনিবার (২৯ জুন) ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে পুরাতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়ি মন্দির সংলগ্ন নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে গ্রাহকদের শত কোটি হাতিয়ে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশে ফিরে প্রাণনাথ দাসের গ্রেপ্তারের খবরে বিক্ষুদ্ধ আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় শনিবার সকাল থেকে সাতক্ষীরা সদর থানার সামনে ভিড় করেন। খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকার আমানতকারিরা নতুন নতুন অভিযোগ নিয়ে হাজির হন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মহিদুল ইসলামের কাছে।
গ্রেপ্তারকৃত প্রাণনাথ দাস (৪৬) সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার টিকেট গ্রামের মৃত জুড়ন দাসের ছেলে। তিনি পুরাতন সাতক্ষীরা মায়েরবাড়ি মন্দির সংলগ্ন এলাকায় চারতলা বাড়ি করে সেখানে বসবাস করতেন। ভারতে কারাভোগের পর দেশে ফিরে তিনি ওই বাড়িতে এসে উঠেন।
উল্লেখ্য অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে সাতক্ষীরা ও তার আশেপাশের উপজেলার জেলার সহজ সরল নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর হাজার হাজার মানুষকে ভুল বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রগতি নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পরিচালক প্রানাথ দাস। কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে এসে গ্রাহকদের আমানতের টাকা ও লভ্যাংশ ফেরত দিতে গড়িমোশি শুরু করেন প্রাণনাথ। একপর্যায় তিনি আত্নগোপনে চলে যান। কোন উপায় না পেয়ে আমানত কারীদের কেউ কেউ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাননি। এরইমধ্যে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর শত শত গ্রাহক প্রগতি কার্যালয়ে এসে দেখেন অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে অফিসটি। গ্রাহকের শত কোটি টাকা নিয়ে স্বপরিবারে ভারতে পালিয়ে যায় প্রাণনাথ দাস। চলতি বছরের ১৯ মার্চ ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গা এলাকা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ (এসডিএফ) এর হাতে আটক হন প্রাণনাথ দাস। ভারতে দীর্ঘ তিন মাস কারাভোগের পর গত কয়েক দিন আগে দেশে ফেরেন তিনি। এর আগে তার স্ত্রী ও সন্তান দেশে ফিরে আসে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুহিদুল ইসলাম প্রাণনাথ দাসকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে