চলতি লিগ মৌসুমে কম সংগ্রাম করেনি বার্সেলোনা। লিগের প্রায় ১০ এর কাছাকাছি অবস্থান থেকে অবশেষে শীর্ষস্থান হাতছানি দিয়ে ডাকছিল দলটিকে। জিতলেই চলে যেত চূড়াতে। এমনই এক সময় কিনা, লিওনেল মেসির দল হেরেছে এমন এক দলের কাছে, যাদের বিপক্ষে এর আগে ড্রও নেই নিজেদের মাঠে। সেই গ্রানাডার বিপক্ষে এগিয়ে গিয়েও বার্সা হেরেছে ২-১ গোলে, ফলে শীর্ষে ওঠা আর হয়নি দলটির।
অথচ নিজেদের মাঠে শুরুটা কি দুর্দান্তই না হয়েছিল মেসিদের। শুরু থেকেই মাঝমাঠের দখল, দারুণ প্রেসিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছিল। মাঝমাঠ থেকে সার্জিও বুসকেটসের রক্ষণচেরা পাস খুঁজে পাচ্ছিল প্রতিপক্ষ বিপদসীমার কাছাকাছি থাকা মেসিকে, অ্যান্টোয়ান গ্রিজমানের সঙ্গে বোঝাপড়াটাও ইঙ্গিত দিচ্ছিল বড় জয়েরই। সব মিলিয়ে সফরকারী গ্রানাডাকে সুযোগই দিচ্ছিল না দলটা।
মেসির ২৩ মিনিটের গোলে এগিয়েও যায় কোচ রোনাল্ড কোম্যানের শিষ্যরা। এরপর প্রথমার্ধে মেসির আরেকটা সুযোগ নষ্ট না করলে হয়তো ম্যাচটা শেষ হয়ে যেত সেখানেই। তবে সেটা হয়নি বলেই দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে আবারও ম্যাচের ফেরার মনোবলটা পেয়েছে সফরকারী গ্রানাডা।
প্রথমার্ধে বার্সার মুহুর্মুহু আক্রমণ হজম করা গ্রানাডা বিরতির পর থেকেই ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায়। ওদিকে বার্সাও ম্যাচটা শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা কম চালায়নি। তবে সফলতা পায় সফরকারীরাই। ৬০ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের থ্রু বল ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি বার্সা ডিফেন্ডার অস্কার মিনগেসা, সুযোগটা গিয়ে পড়ে ডারউইন মাচিসের কাছে। সেখান থেকে তার গোল সমতায় ফেরায় গ্রানাডাকে।
তবে এরপর বার্সা পড়ল আরও বিপদে। রেফারিকে ‘অপমান’ করে আচমকাই লাল কার্ড দেখে বসেন কোচ কোম্যান। ম্যাচের আশাটাও যেন শেষ হয়ে গেল সেখানেই। গ্রানাডার আরও কয়েকদফা আক্রমণ হজম করে শেষমেশ আরও এক গোল হজম করে বার্সা। বদলি হিসেবে মাঠে নামা আদ্রিয়ান মারিনের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোলটি করেন ৩৯ বছর বয়সী হোর্হে মলিনা। ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ করে দেয় সে গোলটাই। ফলে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লিগে বার্সাকে তাদেরই মাঠে হারানোর স্বাদটাও পেয়ে যায় গ্রানাডা।
এমন হারের পর অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে পয়েন্ট টেবিলে মেসিদের দূরত্বটা আর কমল না, দুই পয়েন্টে পিছিয়ে আছে তারা কোচ দিয়েগো সিমিওনের দল থেকে। ফলে লিগ জিততে দলটির সামনে এখনকার সমীকরণ হলো, জিততে হবে সব ম্যাচ। লিগের অনিশ্চয়তার কথা মাথায় রাখলে যে ব্যাপারটাকে আরও কঠিনই মনে হওয়ার কথা বার্সার জন্য। ওদিকে শীর্ষ চারের অন্য দুই দল রিয়াল আর সেভিয়ার পয়েন্ট ব্যবধান মাত্র এক পয়েন্টের। সব মিলিয়ে লা লিগার শেষ কয়েকটা সপ্তাহ সম্ভাবনা দেখাচ্ছে দারুণ রোমাঞ্চকর পরিসমাপ্তিরও।
খুলনা গেজেট/কেএম