পবিত্র রমজান উপলক্ষে ভেজাল খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল যুক্ত খাদ্য বাজারজাত করা অসাধু চক্রের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। ইতিমধ্যে যশোরে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ভেজাল অপতৎপরতা রুখে দিতে যশোরে শহর ও শহরতলীতে চলছে সিভিল ফোর্সের বিশেষ টহল। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে অপরাধীদের প্রতি জিরো টলারেন্স ভূমিকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সিনিয়র অফিসারদের। এরই অংশ হিসেবে কেশবপুর উপজেলায় একটি বহুতল ভবনের মধ্যে সন্ধান মিলেছে অবৈধ পানীয় উৎপাদন কারখানা। উদ্ধার হয়েছে ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ভেজাল পানীয় ও দ্রব্যাদি। এসময় আটক করা হয়েছে ওই চক্রের তিনজনকে। এ অভিযান ও নজরদারি রমজান মাস জুড়ে অব্যাহত থাকবে।
আর মাত্র একদিন পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। প্রতি বছর এ সময় মৌসুমী ও কৌশলী নানা ভার্সনের ব্যবসায়ী ও কারখানার আবির্ভাব ঘটে। বিশেষ করে বিভিন্ন ভার্সনের ড্রিংকস, রং বেরঙের রুহআফজা, শিশু খাদ্য, আইসক্রিমসহ নানা প্রকারের ভ্রাম্যমান কারখানা। যাদের কোনো কাগজপত্র নেই। অনুমোদন নেই স্বাস্থ্য বিভাগ কিংবা বিএসটিআই’র।
এবার রমজানকে পুঁজি করে সক্রিয় প্রতারক চক্রকে রুখে দিতে আগাম গোয়েন্দা নজরদারি শুরু হয়েছে। অপরাধী ও অসাধু চক্রের অপতৎপরতার খোঁজে অভিযান চালিয়ে জেলা গোযেন্দা শাখা ডিবি ৩০ মার্চ কেশবপুর পোস্ট অফিস এলাকার কবরস্থানপাড়ায় সন্ধান পায় একটি ভেজাল পানীয় উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের। ওই এলাকার রাজিবুলের বাড়ি ঘেরাও করে চলে অভিযান।
এসময় বিপুল পরিমাণ ভেজাল খাদ্যদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয়েছে ৩ জনকে। এরা হচ্ছে, উপজেলার মজিদপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা খাতুন নাইস (৩২), কাবিলপুর গ্রামের প্রফুল্ল দাসের ছেলে আনন্দ দাস (৩৯) ও রাজনগর গ্রামের কাদের গাজীর ছেলে রুহুল আমীন (৩২)।
আটককৃতরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব ভেজাল খাদ্যদ্রব্য যশোর জেলাসহ সারাদেশে বাজারজাত করতেন। আটককৃতদের থেকে উদ্ধার হয় ১৪ হাজার ৪০০ প্যাকেট ম্যাঙ্গো সফট ড্রিংকস, ২ হাজার ৬৪০ কৌটা তানজীম সফট ড্রিংকস পাউডার, ৩৮৪ প্যাকেট তানজীম ম্যাঙ্গো ড্রিংকস পাউডার, ৪০০ কেজি সফট ড্রিংকস পাউডার। যন্ত্রপাতির মধ্যে উদ্ধার হয় স্টিলের তৈরি ২টি পুরাতন ওভেন, ১টি সিলিং মেশিন, ১টি মিকচার মেশিন, ১টি ওজন পরিমাপক যন্ত্র ও ২ বস্তা চিনি। উদ্ধারকৃত মালামালের মূল্য ২৪ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ টাকা।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ রুপন কুমার সরকার বলেন, ভেজাল কারবারী ও প্রতারক চক্রকে ধরতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ। কঠোর হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে পুলিশের উপর মহল থেকেও। ভেজাল কারবারীদের পাকড়াও করতে সজাগ রয়েছে গোয়েন্দা শাখা। জেলার ৮ উপজেলার সর্বত্র নজরদারি চলছে। বিশেষ করে রমজানকে পুঁজি করে মৌসুমি ও ভ্রাম্যমান কারখানা পরিচালনাকারী চক্র খুঁজে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খুলনা গেজেট/কেএ