খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ আট কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির
  বিশ্বকাপ বাছাই : মার্টিনেজের ভলিতে পেরুর বিপক্ষে জয় পেল আর্জেন্টিনা

গোপালগঞ্জে ৫৮ ছাত্রীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত, দায় কার!

নিজস্ব প্রতি‌বেদক, গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জ জেলা শহরের শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৮ ছাত্রীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ওই ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না শ্রেনী কক্ষে। গ্রহণ করা হয়নি অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার ফি। এর মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ১৩ জন, ৭ম শ্রেনীর ১৮জন, ৮ম শ্রেনীর ১৬জন এবং ৯ম শ্রেনীর ১১ জন ছাত্রী রয়েছে।

বুধবার(১ জুন) দুপুরে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কের উপর দাঁড়িয়ে হাতে হাত ধরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে এসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। এসময় পরীক্ষায় অংশগ্রহণসহ শিক্ষা জীবন নিশ্চিতের দাবী সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অভিভাবক মোঃ শহীদুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ৫৮ শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাশ করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের ভর্তি অবৈধ উল্লেখ করে তাদেরকে স্কুলে আসতে ও অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় অংশ নিতে বাঁধা দেয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ওই সব শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বছরের অর্ধেক সময় অতিবাহিত হবার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।এসব শিক্ষার্থীরা যাতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী সায়েরা হাসিনা ও জাফরিন সুলতানা বলেন, বছরের মাঝখানে এসে আমাদের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। এতোদিন আমরা এই স্কুলে লেখাপড়া করেছি। এখন আমরা স্কুলে যেতে পারছি না। এখন তো আমরা অন্য স্কুলেও ভর্তি হতে পারবো না। আমাদের অপরাধ কি? আমাদের লেখাপড়া কি বন্ধ হয়ে যাবে?

অভিভাবক হাবিবুর রহমান ও আরিফা পারভীন বলেন, গত ৫ এপ্রিল শেখ হাসিনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়রা আক্তার আকস্মিকভাবে বদলী হয়ে যান। তিনি ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি অনুমোদন করেন। তিনি চলে যাওয়ার পর শাহানাজ রেজা এ্যানি নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। নতুন অধ্যক্ষ যোগদানের পর ওই ৫৮ শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ছাত্রী ভর্তি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।

তারা আরও বলেন, আগামী ২ জুন থেকে বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার রুটিন দেয়া হয়েছে। সকল শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তি ফি গ্রহণ করা হলেও ওই ৫৮ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পরীক্ষার ফি গ্রহণ করা হয়নি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করলে আমাদের জানানো হয় সাবেক অধ্যক্ষ ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি রেজিস্ট্রারে নাম তুলে না যাওয়ায় এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমরা তাদের পরীক্ষার ফি গ্রহণ করছি না। এ ব্যাপারে আমরা শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

বর্তমান অধ্যক্ষ শাহানাজ রেজা এ্যানি-র সাথে মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সাবেক অধ্যক্ষ হুমায়রা আক্তার বলেন, যে ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে, এটা দুঃখজনক। আমি ব্যাংকে চিঠি দিয়ে টাকা নিতে নিষেধ করলেও কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীর যোগসাজগে এ কাজটি হয়েছে। আমি এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করেছিলাম। কিন্তু বদলী জনিত কারণে এটি আর হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক নয়। আমি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার।

জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, যে ৫৮ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের কথা বলা হচ্ছে তারা এ স্কুলের শিক্ষার্থীই না। স্কুলে তাদের কোন কাগজপত্র জমা নাই। হাজিরা খাতায় তাদের নাম নাই। তারা অবৈধভাবে স্কুলটিতে ক্লাস করছিলো। এ ব্যাপারটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!