২০১০ সালে মুসলিম শরিয়া মোতাবেক যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার জহুরপুর ইউনিয়নের ছোটখুদড়া গ্রামের নূর আলীর ছেলে ইকরামুলের সাথে বিয়ে হয় রেহানা খাতুনের। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় স্বামীর বাড়ির লোকজন যৌতুক দাবি করতে থাকে। ভ্যানচালক বাবা মেয়ের সুখের আশায় কয়েক কিস্তিতে দেড় লাখ টাকা পরিশোধও করেন। কিন্তু আরও এক লাখ টাকার দাবি না মেটাতে পারায় শারীরিক নির্যাতন করা হতো রেহানাকে। ভয়ে মুখ খুলতে পারতেন না তিনি।
সম্প্রতি ওই এক লাখ টাকার জন্য স্বামী ও শ্বাশুড়ি চাপ দিতে থাকে রেহানাকে। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত বৃহস্পতিবার রেহানার দু’হাত ও দু’পা ভেঙে দেয় স্বামী ও শাশুড়ি। রেহানা খাতুনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রেহেনার বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, তার স্ত্রী রাস্তায় শ্রমিকের কাজ করেন। তিনি ভ্যান চালান। সামান্য আয়ে চলে তাদের সংসার। তারপরও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পর্যায়ক্রমে দেড় লাখ টাকা দেয়া হয়। আরও একলাখ টাকার জন্য চাপ দেয়। এ টাকা না পেয়ে মেয়েকে মারপিট করে চার হাত পা ভেঙে দিয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় বাঘারপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
গৃহবধূ রেহেনা খাতুন বলেন, আমার স্বামী নেশা করে। বিভিন্ন সময়ে বাবার কাছ থেকে টাকা আনতে বলে। এ টাকা না আনতে পারলেই মারপিট শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার এক লাখ টাকা আনতে বাবার বাড়ি যেতে বলে। আমি পারবো না বলার সাথে সাথে লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে। এসময় জ্ঞান হারিয়ে যায় আমার। পরে স্থানীদের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি হই।
অভিযুক্ত ইকরামুলের ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে শাশুড়ি জুলেখা বেগম মারপিটের কথা স্বীকার করেন। গাঁজা সেবনের অপরাধে তার ছেলে জেল খেটেছে বলেও জানান জুলেখা।
হাসপাতালের চিকিৎসক ফারজানা সিনথিয়া জানান, রেহেনার দু’হাত ও ডান পা ভেঙ্গে গেছে। বাম পা আঘাতে ফুলে উঠেছে। তাই ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কারণে রক্ত জমাট বেধেছে।
বাঘারপাড়া থানার ওসি ফিরোজ উদ্দিন জানান, গৃহবধূকে হাত পা ভেঙে দেয়ার ঘটনায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। তদন্ত অফিসার ইতিমধ্যে আসামি আটকের কাজ শুরু করেছেন।