নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং সেই দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এতে সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের নাম বাদ দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। যোগ করা হয়েছে এজাহারে না থাকা দুইজনের নাম।
অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে নুর হোসেন বাদল, আবদুর রহিম, আবুল কালাম, আবদুর রব চৌধুরী ওরফে লম্বা চৌধুরী ও মাঈনুউদ্দীন। এদিকে যুক্ত করা হয়েছে নুর হোসেন ওরফে রাসেল ও মো. জামাল উদ্দীন ওরফে প্রবাসী জামালের নাম।
নোয়াখালীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের ৩ নম্বর আমলি আদালতের সাধারণ নিবন্ধন অফিসের (জিআরও) কর্মকর্তা মো. সোহেল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শনিবার সকালে জিআরওতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মোস্তাফিজুর। অভিযোগপত্র ও রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রোববার তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এরপর আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২০২০ সালে বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে স্থানীয় সন্ত্রাসী দেলোয়ার বাহিনী স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে প্রহার করে। সেই দৃশ্য মোবাইলফোনে ধারণ করেন অভিযুক্তরা। আহত ওই নারী চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে জেলা সদরে তার বোনের বাসায় পালিয়ে যান।
সেখানে গিয়েও অভিযুক্তরা তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন। গৃহবধূ এতে রাজি না হওয়ায় আগের ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশ প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে। তখন নারী নির্যাতন মামলার পাশাপাশি বেগমগঞ্জ থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ইসরাফিল, শামছুদ্দিনসহ সাতজনের নামে মামলা হয়। মামলার তদন্ত ভার পায় পিবিআই।
তদন্ত শেষে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ইসরাফিল, শামছুদ্দিন ও এজাহারের বাইরের নুর হোসেন রাসেল ও জামাল উদ্দিন ওরফে প্রবাসী জামালের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করল পিবিআই। প্রমাণ না মেলায় এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আদালতে আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/ টি আই