শস্যচিত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর একক যে শিল্পকর্ম তৈরি হয়েছে তা বিশ্বে সবচেয়ে বড়। চীনের ৭৫ বিঘা জমির একটি শস্যচিত্রকে হটিয়ে জায়গা করে নিয়েছে বাঙালি জাতির পিতার এই শস্যচিত্র।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের মনোনীত প্রতিনিধিদলের প্রধান শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরের পর তারা (গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অথরিটি) ই-মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শস্যচিত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর একক যে শিল্পকর্ম তৈরি হয়েছে তা বিশ্বে সবচেয়ে বড়।
এক মাস আগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় ১০০ বিঘা জমিতে দুই জাতের ধানের চারা রোপণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অনুসরণে রোপণ করা হয় এই চারা। সেই চারা বড় হতে শুরু করায় বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় প্রতিকৃতি ফুটে ওঠে।
গেল ৯ মার্চ গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের দুই প্রতিনিধি শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী সরেজমিন পরিদর্শন করেন। তারা সে সময় জানান, গিনেস রেকর্ডের সব শর্তই পূরণ করেছে বঙ্গবন্ধুর শস্যচিত্রটি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গঠিত জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে এবং ন্যাশনাল এগ্রিকেয়ার নামে একটি প্রাইভেট কোম্পানির অর্থায়নে প্রতিকৃতিটি তৈরি করা হয়।
গত ২৯ জানুয়ারি এই প্রকল্পের চারা রোপণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
গিনেস রেকর্ডে জায়গা পাওয়ার পর প্রকল্পের আহ্বায়ক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা জাতির জন্য বড় অর্জন। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রকল্পে সহায়তার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
জাতীয় পরিষদের সদস্যসচিব কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘গত বছরের মার্চ মাস থেকে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু কর্মসূচির কাজ শুরু করা হয়। বেগুনি ও সবুজ রঙের ধানগাছে ফুটিয়ে তোলা হয় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। চায়না থেকে বেগুনি রঙের ধানের জাত (এফ-১) আমদানি করা হয়।’
আয়োজকরা জানান, ১ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ জন নারী শ্রমিক কাজ করেছেন। তাদের সাথে প্রতিদিন যুক্ত ছিলেন ১৫ থেকে ২০ জন পুরুষ শ্রমিক। তাদের সমন্বয়ে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।
তারা আরও জানান, এর আগে ১৩ রেজিমেন্টের বিএনসিসির ১০০ সদস্য শুকনো জমিতে প্রতিকৃতি নির্মাণ করেন। আরেকটি দল কাদা জমিতে লে-আউট তৈরি করেন। তাদের মধ্যে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্য ছাড়াও বগুড়ার আজিজুল হক সরকারি কলেজ ও সরকারি শাহ সুলতান কলেজের অনেক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
পরে নকশার দায়িত্ব পায় এক্সপ্রেশন লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান। এই ১০০ বিঘা জমি স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি বিঘা জমি ৯ হাজার টাকায় সাত মাসের (নভেম্বর থেকে মে) জন্য ইজারা নেয়া হয়।
খুলনা গেজেট/ টি আই