খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরের মৃত্যু
  আগুন নিয়ন্ত্রণে, খুলনায় পাট গোডাউনসহ ১০ দোকানের কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই
বলছে সেভ দ্য চিলড্রেন

গাজায় নিখোঁজ ২০ হাজারের বেশি শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

টানা আট মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। নিরলস এই আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এছাড়া গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার মধ্যে ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিখোঁজ হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এই তথ্য সামনে এনেছে বলে সোমবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

সেভ দ্য চিলড্রেন সোমবার জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজা উপত্যকায় ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিখোঁজ হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে, অনেককে আটক করা হয়েছে, অনেককে আবার অচিহ্নিত কবরে সমাহিত করা হয়েছে আবার অনেকেই তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক এই দাতব্য সংস্থা বলেছে, গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েল নিরলসভাবে স্থল ও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই কারণে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে তথ্য সংগ্রহ এবং তা যাচাই করা ‘প্রায় অসম্ভব’। তবে গাজায় অন্তত ১৭ হাজার শিশু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া আনুমানিক ৪ হাজার শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছে এবং বিভিন্ন গণকবরেও অসংখ্য শিশুকে সমাহিত করা হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, ‘অন্যান্যদের জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে, যার মধ্যে অজ্ঞাত সংখ্যক শিশুকে আটক করা হয়েছে এবং জোরপূর্বক গাজা থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া তাদের পরিবারের কাছে তাদের অবস্থান এখনও অজানা।’

সেভ দ্য চিলড্রেনস-এর রিজিওনাল ডিরেক্টর ফর মিডল ইস্ট জেরেমি স্টোনার বলেছেন, ‘পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জন কোথায় অবস্থান করছে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। কোনো অভিভাবককে যেন তাদের সন্তানের মৃতদেহ খুঁজে বের করার জন্য ধ্বংসস্তূপ বা গণকবর খুঁড়তে না হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো শিশুর একা ও অরক্ষিত অবস্থায় থাকা উচিত নয়। কোনো শিশুকে আটকে রাখা বা জিম্মি করাও উচিত নয়।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

হামাসকে নির্মূলের যুদ্ধের নামে ইসরায়েল গত আট মাসে ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি এই আগ্রাসন গাজায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!