ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘দ্যা স্ট্রং হ্যান্ড’ নামে অভিযান শুরু করেছে। হামলার পর গাজা জুড়ে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে, এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু লেবাননের রকেট হামলার জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপরই গাজায় বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার অন্তত পাঁচটি স্থানকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এগুলো হলো- উত্তর গাজার বেইত হেনোন কৃষি জমি, গাজা শহরের দক্ষিণে দুটি এলাকা, গাজা শহরের কাছে আল-জাইতুন এলাকার পূর্বদিকের কৃষিজমি ও দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বদিকের একটি এলাকা।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের একটি নিরাপত্তা সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে হামাসের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা করা হয়েছে।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজায় হামাসের দুটি সুড়ঙ্গ ও দুটি অস্ত্র কারখানায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
প্রথম টানেলটি গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর বেইত হেনোনের কাছে ছিল। আর দ্বিতীয়টি, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে। যেখানে ২০২১ সালে গাজা যুদ্ধের সময় প্রথম আঘাত হানা হয়েছিল। সাম্প্রতিক এই সুড়ঙ্গ পুনর্নির্মাণের চেষ্টা চিহ্নিত করা হয়েছে।
তবে, সুড়ঙ্গ দুটি ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি।
এদিকে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কয়েক মিনিট পর গাজা থেকে অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক মিসাইল ও রকেট নিক্ষেপ করা হয়। ফলে গাজা কাছাকাছি বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি শহরে সাইরেন বেজে ওঠে। টুইটারে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, দক্ষিণ ইসরায়েলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে ৩৪টি রকেট ছোড়ার ঘটনায় ২০০৬ সালের লেবানন-ইসরায়েল যুদ্ধের পর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সবচেয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। লেবানন থেকে রকেট হামলার জন্য গাজা শাসন দল হামাসকে দায়ী করেছে ইসরায়েল। তবে, হামলার পেছনে কারা ছিল তা জানার কথা অস্বীকার করেছে হামাস।
ইসরায়েলি গাজায় বোমাবর্ষণ শুরু করার কিছুক্ষণ আগে, গাজার প্রধান সশস্ত্র দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট অপারেশন রুম থেকে বলা হয়েছে, তারা ইসরায়েলের যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত।
এর আগে ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায় যে, দেশটির সরকার গাজা ও লেবাননে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই সপ্তাহে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর বারবার ইসরায়েলি হামলার ফলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির তৈরি হয়। ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসার ভেতর হামলা ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি সৈন্যরা মুসল্লিদের মারধর করছিল তখন নারী ও শিশুরা পেছন থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন।
এদিকে, দক্ষিণ লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলেছে যে তারা আল-আকসায় হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনিদের দ্বারা নেওয়া ‘সকল ব্যবস্থা’ সমর্থন করবে।