খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খুলনার বড় বাজারের পাটের বস্তার গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস
  আজারবাইজানে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলন শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

গভীর রাতে ছুটে গেলেন চার উপদেষ্টা, হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

গেজেট ডেস্ক

চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের শান্ত করতে বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটায় রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়কে ছুটে গিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা ও প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদার একজন সহকারী। তাঁদের দাবি পূরণের আশ্বাসে প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা পর সড়ক থেকে হাসপাতালে ফিরতে রাজি হয়েছেন আহতরা।

রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় অবস্থিত পঙ্গু হাসপাতাল ও পাশের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি বুধবার দুপুর ১টা থেকে হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। এই ব্যক্তিদের কারও এক পা নেই, কেউ হুইলচেয়ারে, আবার কারও চোখে ব্যান্ডেজ রয়েছে। তাঁরা এক পর্যায়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন। পরে হাসপাতালে ফিরে যেতে চারজন উপদেষ্টাকে সেখানে উপস্থিত হওয়ার শর্ত দেন।

সেই শর্ত অনুযায়ী উপদেষ্টারা না যাওয়ায় রাত ১২টার পর হাসপাতাল থেকে বিছানাপত্র এনে সামনের ওই সড়কে অবস্থান চালিয়ে যান আহত ব্যক্তিরা। কেউ শুয়ে, কেউ বসে সময় পার করতে থাকেন। এই অবস্থা চলার মধ্যে রাত আড়াইটার সময় সেখানে হাজির হন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় সহকারী (স্বাস্থ্য) হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. সায়েদুর রহমান।

উপদেষ্টারা ভুল স্বীকার ও দুঃখপ্রকাশ করেন। তাঁরা আহতদের দাবি–দাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সচিবালয়ে বৈঠকে বসার কথা বলেন। আহতদের প্রতিনিধি দলের যাওয়ার জন্য দুটি গাড়ি পাঠাবেন বলে জানান। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য একটি রূপরেখা তৈরি করে ডিসেম্বরের মধ্যে তা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন।

প্রথমেই আহতদের উদ্দেশে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘এখন এখানে আপনাদের কথা শোনার মতো উপযুক্ত সময় নয়। আপনারা কাল ২টার সময় সচিবালয়ে আসেন। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হবে। সেই রূপরেখা ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।’ এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু ব্যবস্থা না হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে।’

এ পর্যায়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের ব্যর্থতা, আমাদের ভুল আছে। কিন্তু চেষ্টার দিক দিয়ে আমাদের ঘাটতি ছিল না। যে কোনো কারণেই হোক আমরা পারিনি। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন, আমরা একটি কংক্রিট (সুষ্পষ্ট) রূপরেখা দিব, লিখিত দিব।’

নিজেদের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘একটা ভঙ্গুর অবস্থার মধ্যে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। বহু সমস্যা দেখা দিয়েছে। আসুন আমরা আলোচনার ভিত্তিতে একটা রূপরেখা তৈরি করি। সেটা ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য আপনারা একটা টিম করবেন।’

স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সহকারীর দায়িত্বে আসা ড. মো. সায়েদুর রহমান আহতদের দেশের সেরা চিকিৎসা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা সুযোগ চাই। আমাদের একটা সুযোগ দিন। কোনো ব্যত্যয় হলে আমরা দায়িত্বে থাকব না।’

আর উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘আমরা কথা দিচ্ছি, আপনাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করব। না পারলে তখন যা ইচ্ছা করবেন, কোনো আপত্তি থাকবে না। তবে আপনাদের সুষ্ঠু চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে।’

এরপর আহতরা হাসপাতালে ফিরতে রাজি হন। তখন উপদেষ্টারা তাঁদের নিয়ে হাসপাতালে ঢোকেন। রোগীদের হাসপাতালের শয্যায় পৌঁছে দিয়ে পঙ্গু হাসপাতাল ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীদের দেখে রাত সোয়া ৪টার পর উপদেষ্টারা বাসার উদ্দেশে যাত্রা করেন।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!