খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের তিনজন গবেষকের নেতৃত্বে খুলনাঞ্চলে আমন মৌসুমে চাষকৃত স্থানীয় জাতের তিনটি ধানের টিস্যু কালচারের মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ধানের জাত উদ্ভাবন প্রচেষ্টার গবেষণা প্লটের নমুনা শস্য কর্তন আজ ৩ ডিসেম্বর বেলা ১২টায় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মোঃ মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে ধান কেটে আনুষ্ঠানিক শস্য কর্তন উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। এর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত এক দশক ধরে গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে এখানকার শিক্ষকদের মধ্যে গবেষণা মনস্কতা যেমন বেড়েছ, তেমনি গবেষণা কার্যক্রমও বেড়েছে। এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় জাতের ধানের নতুন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন জাত উদ্ভাবনে গবেষণায় যে সাফল্য এসেছে তা আশাব্যঞ্জক। আশা করা যায় আগামী দু’এক বছরের মধ্যে এটি নতুন জাত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে এবং তা কৃষকদের কল্যাণে আসবে।
তিনি বলেন গবেষণার সাফল্য যেনো সাধারণ মানুষের কল্যাণে আসে সেদিকে গবেষকদের সবিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। নতুন জাত হিসেবে ধানের সারিটি KUAT-১৭০১ স্থানীয় জাতের স্থলে চাষ হলে কৃষকের এক মাস সময় বাঁচবে, ফলন বেশি হবে এবং চালের মান ভালো হওয়ায় তা জনপ্রিয় হবে। একই সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপাচার্য এই গবেষণা কার্যক্রমের সাফল্য কামনা করেন।
নমুনা শস্য কর্তনপূর্বে আরও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ রায়হান আলী, এগ্রোটেকনলজি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আশীষ কুমার দাশ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান।
প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, তাদের গবেষণাধীন ধানের সারিটির এ পর্যন্ত যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এই ধানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে স্থানীয় রাণীসেলুট ধানের চেয়ে একমাস আগে পাকবে, গাছের আকৃতি অপেক্ষাকৃত খাটো হওয়ায় ঢলে পড়ার প্রবণতা কম এবং ঢলে পড়লেও ধান ঝরে পড়বে না। চালের আকার ছোট হওয়ায় তা সার্বজনীন জনপ্রিয় হবে। ভাত খেতে হবে সুস্বাদু। স্থানীয় জাতের চেয়ে এর ফলন প্রতি হেক্টরে এক টন বেশি হবে। তিনি আরও জানান বর্তমানে চাষাধীন স্থানীয় জাতগুলো যদি যথাযথ মূল্যায়ন ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে তা অচিরেই চাষ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ, স্থানীয় ধানের এ জাতগুলো হচ্ছে মূল্যবান জিনের ভান্ডার, যা biotic, abiotic resistant এবং মূল্যবান ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ।
নমুনা শস্য কর্তন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আফরোজা পারভীন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এবং গবেষণা কার্যক্রমের সহযোগী একই ডিসিপ্লিনের শিক্ষক জয়ন্তী রায় এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। খবর বিজ্ঞপ্তি
খুলনা গেজেট/এ হোসেন