গতি বাড়াল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর বরাবর এখন সে ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে। ভারতের মৌসম ভবনের দেওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, সোমবার সকালে ঝড়টি পুরী থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে এবং বিশাখাপত্তনম থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। আবহবিদদের অনুমান মিললে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যেই উপকূল ছোঁওয়ার কথা ‘অশনি’র।
এ দিকে সোমবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। হাওড়া, দুই ২৪ পরগণা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে বৃষ্টি হওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে ‘অশনি’র প্রভাবে সেই বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার সকাল থেকে। সোমবারের বৃষ্টির নেপথ্যেও ঘূর্ণিঝড় কি না তা স্পষ্ট জানায়নি মৌসম ভবন। তবে আবওয়াবিদরা মনে করছেন, সরাসরি না হলেও সোমবারের বৃষ্টির পরোক্ষ কারণ ঘূর্ণিঝড়ই।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে সোমবার শুরু হওয়া এই বৃষ্টি চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।
তবে ‘অশনি’ কোন পথে স্থলভাগে ঢুকবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সোমবার সকালে দেওয়া আবহাওয়া দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র তৈরি হয়নি। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের উপকূলের দিকে এগনোর গতিবেগ জানা গেলেও ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণাবর্তের গতি কতটা, স্থলভাগে সেটি প্রবেশ করলে কত গতিতে ঝড় হবে তা জানা যায়নি।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন-৭ অনুযায়ী, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
বুলেটিন-৭ এ জানানো হয়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (অক্ষাংশ: ১৩.০ ডিগ্রি উত্তর, দ্রাঘিমাংশ: ৮৭.৮ ডিগ্রি পূর্ব) অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি গত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
খুলনা গেজেট/ টি আই