এস এম মঞ্জুরুল আলম। শিক্ষক, আইনজীবী ও রাজনীতিক। এ তিন স্তরে তিনি পাঁচ যুগের স্বাক্ষী এ শহরের। শহরের বয়রা গ্রামের সন্তান।
১৯৬২ সালে শরীফ কমিশন রির্পোটের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন, ছাত্র ইউনিয়নের ব্যানারে। ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত জেঃ আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছে বিএল কলেজ অঙ্গনে। ১৯৭০ সালে মওলানা ভাসানী নির্বাচন বর্জন করলেও এ দলের তরুণ অংশ বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে অবস্থন নেয়। ১৯৬৯ সালে আইন পেশায় যোগ দিয়েও আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে আইনজীবী সমিতির মিছিলে অংশ নিয়েছেন। আইনজীবী হিসেবে ১৯৭২ সালে যুদ্ধাপরাধীর মামলা, ১৯৮০ সালে খুলনা জেল হত্যা, ১৯৮২ সালে বনদস্যু বাসের ডাকাত, ১৯৮৮ সালে চার নম্বর ঘাটের এরশাদ শিকদার, নাজেম সরদার সর্বশেষ জাপা নেতা শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলায় আইনী সহায়তা দিয়েছেন। প্রত্যক্ষ করেছেন কাউন্সিলর শহিদ ইকবাল বিথার হত্যা মামলা, তেরখাদার ক্যাপ্টেন ফোহাম উদ্দিন হত্যা মামলা, ডুমুরিয়ার আব্দুল মজিদ মাষ্টার হত্যা মামলা ইত্যাদি।
ফৌজদারি মামলায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সহকর্মী আইনজীবীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতার কারণে একাধিকবার তিনি আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখানকার অডিট কমিটির প্রধানও ছিলেন। খুলনা সিটি ল’ কলেজের শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে শত শত আইনজীবী গড়ে তুলেছেন। ছাত্রজীবনে গণতন্ত্র চর্চার ধারবাহিকতায় জেঃ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে অবস্থান করে এ ধারা থেকে বিচ্যুত হননি। দল ক্ষমতাচ্যুত হলেও তিনি জাপার বিকাশ লাভে শ্রম দিয়েছেন।
একটি অপশক্তির চক্রান্তে দল থেকে এক পর্যায়ে ছিটকে পড়েন। তবুও ক্ষোভ ছিল না তার মনে। তার চিরপ্রস্থানে খুলনার আদালত পাড়া, সভা- সমাবেশের সুবক্তা, সৃজনশীল প্রবন্ধকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একজন নিবেদিত কর্মীর শূন্যতা সৃষ্টি হল।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি