কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য আহ্বায়কের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করায় ড. রেজা কিবরিয়াকে গণঅধিকার পরিষদ থেকে অভিশংসন (ইমপিচমেন্ট) করা হয়েছে।
শনিবার (০১ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় গণঅধিকার পরিষদ। এদিন বেলা ১১টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ জরুরি সভা থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সম্মতির ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শনিবার (০১ জুলাই) বিকেলে গণঅধিকার পরিষদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঈদের ছুটিতে যানবাহন সংকট ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে অন্য সদস্যরা উপস্থিত হলেও সভা ডেকে আহ্বায়ক নিজেই অনুপস্থিত থাকেন। এ অবস্থায় সভায় উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খানকে সভার সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করা হয়। সদস্য সচিব নুরুল হক নুর সভা সঞ্চালনা করেন।
দলের চলমান সংকট নিরসনে জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১০ জুলাই দলটির জাতীয় কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে শনিবার (০১ জুলাই) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ড. রেজা কিবরিয়া জানান, বিশৃঙ্খলা এড়াতে এবং নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে জরুরি সভায় অংশ নেননি তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে রেজা কিবরিয়া বলেন, আমি নিজেও সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য রওনা দিয়েছিলাম। বিভিন্ন সোর্স থেকে জানতে পারলাম ভিপি নুর একই সময়ে আরও তিনটি সভা ডেকেছেন। আমি আরও জানতে পারলাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সারাদেশ থেকে বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী ও বহিরাগত লোক এনে কার্যালয়ের আশপাশে জড়ো করেছেন।
সভায় গঠনতন্ত্রের ধারা ৩৮, ১৮ (গ) এর (১) (৩) ও (৮), ৩৪ (ঙ) এবং ৪১ এর ক্ষমতাবলে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
১) গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য আহ্বায়কের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করায় আহ্বায়ককে অপসারণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
২) দলের চলমান সংকট নিরসনে জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১০ জুলাই দলের উচ্চতর পরিষদ ও জাতীয় কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
৩) কাউন্সিলের আগ পর্যন্ত ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলের পূর্ব পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিব রুটিন মাফিক নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন দলের গঠনতন্ত্রের ৩৮ ধারা অনুযায়ী গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের ৮৪ সদস্যের সইসহ আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সদস্যদের কাছে বক্তব্য চেয়ে এ জরুরি সভা ডাকা হয়েছিল।
সম্প্রতি দলের আর্থিক অস্বচ্ছতাসহ নানা ইস্যুতে রেজা কিবরিয়ার সঙ্গে নুরুল হক নুরের মতপার্থক্য তৈরি হয়।
এরই মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক পদে রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে তাকে চিঠি দেন নুরের সমর্থকেরা। এর আগে গত ২০ জুন দলের সদস্য সচিবের পদ থেকে নুরকে বহিষ্কার করেন রেজা কিবরিয়া।
খুলনা গেজেট/কেডি