মতিঝিল যমুনা মানি এক্সচেঞ্জের স্বত্বাধিকারী আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে ডলারের সংকট। আজ ১১২ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক দিন আগেও ১০৫ টাকা করে বিক্রি হয়েছে।’
খোলাবাজারে টাকার বিপরীতে এক দিনের ব্যবধানে প্রতি ডলার রেকর্ড ৬ থেকে ৮ টাকা বেড়ে ১১২ টাকায় উঠেছে।আগের দিন সোমবারও এই বাজার থেকে এক ডলার কিনতে খরচ হয়েছিল ১০৪ থেকে ১০৬ টাকা।
এ দামেও আশানুরূপ ডলার মিলছে না। এর আগে কখনও এক দিনে ডলারের দর এত বেড়ে এ পর্যায়ে ওঠেনি।
মতিঝিল যমুনা মানি এক্সচেঞ্জের স্বত্বাধিকারী আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাজারে ডলারের সংকট। আজ ১১২ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক দিন আগেও ১০৫ টাকা করে বিক্রি হয়েছে।’
এক দিনের ব্যবধানে এত দাম বাড়ার কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাজারে ডলারের দাম উন্মুক্ত করে দেয়ার পর দাম বাড়ছেই ৷ আর চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ডলার নেই। অনেকে ডলার কিনে ধরে রাখতে চাইছে। অনেকে ডলার কিনতে এলেও সবাইকে দেয়া সম্ভব হয়নি।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, খোলাবাজার থেকে যে কেউ ডলার কিনতে পারেন। ব্যাংক থেকে কিনতে পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট করতে হয়। যে কারণে অনেকে এখন খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে শেয়ারবাজারের মতো বিনিয়োগ করছেন, যা অবৈধ।
কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, খোলাবাজারে তীব্র সংকট রয়েছে ডলারের। ব্যাংকের মতো খোলাবাজারেও ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে, বিদেশি পর্যটকরাও কম আসছেন। এ কারণে ডলারের সরবরাহ কম।
এর আগে খোলাবাজারে ডলারের সর্বোচ্চ দর ওঠে গত রোববার। ওইদিন খোলাবাজারে ডলারের দর ১০৫ টাকায় উঠেছিল। সেখান থেকে সোমবার আবার ১ টাকা কমে ১০৪ টাকায় বিক্রি হয়।
খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকের আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সেও ডলারের দর অনেক বেড়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। সোমবার আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দর আরও ২৫ পয়সা বেড়েছে। প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলো এই দরে ডলার কিনেছে।
গত এক বছরে আন্তব্যাংক দর ৯ টাকা ৯০ পয়সা বেড়েছে।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরজুড়ে আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন দেখা যায়। সে কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যায়।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বাড়তে থাকে আমদানি ব্যয়। রপ্তানি বাড়লেও কমতে থাকে রেমিট্যান্স। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও কমতে থাকে। বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে যায়; বাড়তে থাকে দাম।
বাজার ‘স্থিতিশীল’ করতে গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় নতুন অর্থবছরেও বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি অর্থবছরের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত ৭০ কোটির বেশি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে রিজার্ভ দুই বছর পর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
খুলনা গেজেট / আ হ আ